পটিয়ায় খামার থেকে ১৯ গরু লুট, মূলহোতা গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামের পটিয়ায় খামার থেকে ১৯ বিদেশি জাতের গরু চুরির ঘটনায় আন্তঃজেলা চোরচক্রের সদস্য, ঘটনার মূলহোতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার চোরের নাম মো. মোক্তার শাহ (৪০)। তিনি পটিয়া উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়াডের বাড়ৈকারা এলাকার শাহ বাড়ির শামসুল ইসলামের ছেলে।

রোববার (১৭ নভেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পটিয়া থানা পুলিশ।

পটিয়া থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ নভেম্বর গভীর রাতে উপজেলার হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের হুলাইন ছালেহ নুর ডিগ্রি কলেজের সামনে এআরএইচ এগ্রো চৌধুরী ডেইরি ফার্ম থেকে ২০-২২ জনের সংঘবদ্ধ চোরের দল খামারের কেয়ার টেকার আবদুল মান্নানকে মারধর করে ১৯টি গরু চুরি করে ট্রাকে করে নিয়ে যায়। গরু নিয়ে যাওয়ার পথেই কেয়ারটেকারকে গাড়ি থেকে মাঝপথে নামিয়ে দেয় চোরের দল।

এ ঘটনায় খামারের মালিক হেলাল উদ্দিন চৌধুরী বাদি হয়ে গত ১৩ নভেম্বর রাতে পটিয়া থানা একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় সেই কেয়ারটেকার আবদুল মান্নানকে। তার আগে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবদুল মান্নানকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এসময় তার এলোমেলো কথাবার্তার সঙ্গে বাস্তবতার মিল না পাওয়ায় পুলিশ তাকে এ মামলায় প্রধান আসামি দেখিয়ে গত ১৩ নভেম্বর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এসব গরুর আনুমানিক মূল্য প্রায় ৪৫ লাখ টাকা। সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার ৫ দিনের মাথায় চোর চক্রের দলনেতা মো. মোক্তার শাহকে শনাক্তসহ তার অবস্থান নির্ণয় করে পুলিশ। সে সূত্র ধরে রোববার সন্ধ্যায় তাকে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানাধীন বদ্দারহাটেে কাঁচাবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

এসময় আসামি মোক্তার ১৯টি বিদেশি জাতের গরু চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।

জিজ্ঞাসাবাদে মোক্তার আরও জানায়, সে পটিয়া থানা এলাকাসহ আনোয়ারা, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া এবং হাটহাজারী থানা এলাকা হতে দীর্ঘদিন ধরে গরু ও ছাগল চুরি করে আসছিল। সোমবার সকালে পটিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হবে।

পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নামজুন নুর বলেন, খামারের কেয়ারটেকার আবদুল মান্নানের সহযোগিতায় গত ১২ নভেম্বর গভীর রাতে সংঘবদ্ধ একটি আন্তঃজেলা চোরের দল ১৯টি গরু চুরি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হওয়ার পর আমরা কেয়ারটেকারকে প্রধান আসামি দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছি। এরপর খামারের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ও আসামিদের তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আন্তঃজেলা গরু চোরচক্রের অন্যতম সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছি। খুব শীঘ্রই অন্যান্য আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

এআরএইচ এগ্রো চৌধুরী ডেইরি ফার্মের পরিচালক ও মামলার বাদি হেলাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমার ডেইরি ফার্ম থেকে এবারসহ চার বার গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। ২০১৬ সালে ৪টি, ২০১৮ সালে ৬টি, ২০২২ সালে ৭টি এবং এবার গত ১২ নভেম্বর রাতে ১৯টি বিদেশি জাতের গরু চুরি করে নিয়ে যায় চোরের দল। কিন্তু দুঃখের বিষয় থানায় মামলা দায়ের করার পর এখনও পর্যন্ত কোনো গরু উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এবারের চুরি হওয়ার ঘটনার পর আমি দিশেহারা হয়ে পড়ছি।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm