বান্ধবীকে অপহরণ করে হোটেলে নিয়ে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মো. সামছুল হুদা জিকু (২৬) নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার (১৬ মে) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানার একটি আবাসিক হোটেল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিকু পটিয়া উপজেলার বরালিয়া ইউনিয়নের পূর্ব পেরলা এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে এবং ইসলামী ব্যাংকের বগুড়া কাহালু শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার।
কোতোয়ালী থানা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে মিলার (ছদ্মনাম) পরিচয় হয় জিকুর। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ মেলামেশাও হয়। কিন্তু জিকু ব্যাংকে চাকুরি পাওয়ার পর মিলা বিয়ের কথা বলতেই প্রথমে জিকু বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে মিলাকে জিকু প্রস্তাব দেয় তাকে বিয়ে করলেও বিষয়টি মিলাকে গোপন রাখতে হবে এবং জিকু পারিবারিকভাবে আরও একটি বিয়ে করবে। মিলা এই প্রস্তাবে রাজি না হয়ে অন্য একজনের সঙ্গে গত মার্চ মাসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
বিয়ে করতে রাজি না হলেও মিলার বিয়ের পর আগের ঘনিষ্ঠ মুহুর্তের ছবিগুলো মিলার স্বামী ও তার শ্বশুর পরিবারকে পাঠানোর হুমকি দিয়ে তাকে দেখা করার জন্য ব্ল্যাকমেইল করে জিকু। গত বৃহস্পতিবার (১৩ মে) ইমো সফটওয়্যারে ম্যাসেজ পাঠিয়ে রোববার নগরের কোতোয়ালী মোড়ে দেখা করতে বলে। মিলা তাতে অসম্মতি দিলে জিকু পুনরায় ছবি ভাইরাল করে দেবে বলে হুমকি দেয়। মিলা মানসম্মানের কথা চিন্তা করে জিকুর কথা মতো রোববার সকাল পৌনে ১১টার দিকে কোতোয়ালী মোড়ের একটি দোকানের সামনে জিকুর সঙ্গে দেখা করেন।
জিকু মিলার সঙ্গে নিউ মেঘনা আবাসিক হোটেলে গিয়ে বসে কথা বলার প্রস্তাব দেয়। মিলা রাজি না হলে আসামি তার ছবি স্বামী ও স্বামীর পরিবারের অন্য লোকজনের কাছে পাঠিয়ে দেবে বলে পুনরায় ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অপহরণপূর্বক নিউ মেঘনা আবাসিক হোটেলের ২০২ নম্বর রুমে নিয়ে যায়। সেখানে ধর্ষণচেষ্টা করলে মিলা চিৎকার করতে থাকে।
একপর্যায়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ চিৎকার শুনতে পেয়ে রুমে গিয়ে মিলার কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত শুনে আসামি জিকুকে আটক করে থানায় খবর দিলে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়। মিলার কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত শুনে আসামিকে হেফাজতে নিয়ে যায় পুলিশ।
ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, হোটেলে নিয়ে গিয়ে সামছুল হুদা জিকু নামে এক বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামি জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় ভিকটিম নারী শিশু আইনের ৭/৯(৪)(খ) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেপ্তার আসামির বিরুদ্ধে পটিয়া থানায় একটি মামলা রয়েছে।
জানা গেছে, শুধু মিলা নয়, এরকম আরও কয়েকজন নারীর সঙ্গে এই ধরনের সম্পর্ক ছিল জিকুর।
এআরটি/এসএ