s alam cement
আক্রান্ত
৪৮৮৮৭
সুস্থ
৩৫৮৯৭
মৃত্যু
৪৯৭

ব্যাংকারের আত্মহনন ইস্যুতে মুখ খুললেন হুইপপুত্র শারুন

0

চট্টগ্রামে আত্মহননকারী ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল মোরশেদ চৌধুরীর স্ত্রীর দ্বিতীয় দফা সংবাদ সম্মেলনের পর মুখ খুললেন হুইপপুত্র নাজমুল করিম শারুন। শনিবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে মোরশেদের স্ত্রী ইশরাত জাহান চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
এদিকে একইদিন সন্ধ্যায় নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে এ বিষয়ে পোস্ট দেন।

শারুন তাতে লিখেন, ‘ব্যাংকার মোরশেদের আত্মহত্যার ঘটনায় আমাকে জড়িয়ে বিভিন্ন মুখরোচক সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আমি এই ঘটনার সাথে কোনভাবেই সম্পৃক্ত নই। আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও “ব” আদ্যক্ষরের একটি শিল্পগ্রুপ আমাকে এই ঘটনায় জড়িয়ে তাদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে। আমার সাথে জনাব মোরশেদের কোন ব্যবসায়িক লেনদেন বা সামাজিক সম্পর্ক নেই। গত দুই বছরে তার সাথে আমার কোন কথা বা দেখা হয়নি। ২০১৯ সালের একটি সামাজিক সালিশে অনেকের মতো আমি উপস্থিত ছিলাম মাত্র । আমি একদিনই জীবনে জনাব মোরশেদকে দেখেছি। আমি বুঝতে পারছিনা, জনাব মোরশেদের স্ত্রী এতদিন পরে বিশেষ মহলের প্ররোচনায় আমাকে এখানে কেন জড়ানোর চেস্টা করছেন?’

তিনি আরও লিখেন, ‘জনাব মোরশেদের আত্মহত্যার পরে সিপ্লাস টিভিতে দেওয়া সাক্ষাতকার ও প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনে, জিডিতে, মামলায় কোথাও আমার কোন নামগন্ধ পর্যন্ত নেই। মোরশেদের আপন ফুপাতো ভাই ও মামলার আসামী পারভেজ ইকবালের টিভি ইন্টারভিউতে দেখলাম, তিনি ব্যাংক ঋন নিয়ে ইনভেস্ট করেছেন এবং কোন ব্যাংক থেকে কত টাকা ঋন নিয়েছেন তা স্পস্ট করেছেন, কত টাকা ব্যাংকের ইন্টারেস্ট দিয়েছেন তাও বলেছেন, তাহলে এখানে আমি কিভাবে বিনিয়োগ করলাম তা বুঝতে পারছিনা!’

শারুন লিখেন, ‘আমার বিরু্দ্ধে এমন মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগের তীব্র নিন্দা জানাই। আমি চাই এই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত হউক, কিছু মিডিয়া ট্রায়াল করে হয়রানীমুলক সংবাদ কাম্য নয়। সত্যের জয় হবেই ইনশাল্লাহ্।’

এর আগে শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন ব্যাংকারের স্ত্রী ইশরাত জাহান চৌধুরী। এতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘২০১৯ সালে ২৯ মে চিটাগাং চেম্বারের পরিচালক শারুন চৌধুরীকে নিয়ে দুটি গাড়িতে করে ১০-১২ জন যুবক বাসায় আসেন। পারভেজ ইকবাল দলের অন্যদের নিয়ে লিফটে করে ওপরে উঠে বাসার দরজা ধাক্কাতে থাকে। এ সময় দরজা খুলতে না চাইলে লাথি মারতে থাকে তারা। নিজের ও শিশুকন্যার নিরাপত্তার জন্য দরজা খুলতে না চাইলেও দরজার অন্যপ্রান্ত থেকে হুমকি দিয়ে পারভেজ ইকবাল দরজা খুলতে চাপ দিতে থাকেন। ভীত হয়ে পালিয়ে আমরা নিকটাত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নেই। সহযোগিতা চাই পুলিশের কাছে। থানায় জিডিও করি, কিন্তু শেষরক্ষা পাননি মোর্শেদ।’

তিনি আরও বলেন, ‘শারুনের পার্টনার পারভেজ সাকিব গং আমার স্বামীকে ২৫ কোটি টাকা ঋণ দেয়। তার বিপরীতে মোর্শেদ তাদের প্রায় ৩৫ কোটি টাকা পরিশোধ করে। তা সত্ত্বেও শারুন চৌধুরীর সেই সহযোগীরা অলিখিত চেক ও স্ট্যাম্পের ভয় দেখিয়ে আরো টাকা দিতে চাপ দেয়।’

Din Mohammed Convention Hall

গত ১১ এপ্রিল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ব্যাংক কর্মকর্তার আত্মহননের নেপথ্যে দায়ীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন আবদুল মোরশেদ চৌধুরীর স্ত্রী ইশরাত জাহান চৌধুরী। এসময় তিনি অভিযোগ করেন, তার স্বামী ব্যবসার জন্য জাবেদ ইকবাল চৌধুরী, পারভেজ ইকবাল চৌধুরী এবং সৈয়দ সাকিব নাঈম উদ্দিনের কাছ থেকে বিভিন্ন দফায় ২৫ কোটি টাকা ধার নেন। বিপরীতে তাদের কাছে লাভসহ ৩৮ কোটি টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু তারা বেশি লভ্যাংশের দাবিতে স্বামীর ওপর মানসিক চাপ, রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। তাদের অনৈতিক চাপের কারণে তার স্বামী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন।

তিনি সেদিন আরও বলেছিলেন, ২০১৯ সালের ২৯ মে জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরীর পুত্র নাজমুল হক চৌধুরী ওরফে শারুন চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে দুটি গাড়িতে করে আসামিরা ১০-১২ জন যুবকসহ ব্যাংকার মোরশেদের বাসায় আসেন। পারভেজ ইকবাল দলের অন্যদের নিয়ে লিফটে ওপরে উঠে বাসার দরজা ধাক্কাতে থাকেন। এ সময় দরজা খুলতে না চাইলে লাথি মারতে থাকেন তারা। নিজের ও শিশুকন্যার নিরাপত্তার জন্য দরজা খুলতে না চাইলেও দরজার অন্য প্রান্ত থেকে হুমকি দিয়ে পারভেজ ইকবাল দরজা খুলতে চাপ দিতে থাকেন। উত্তেজিত পারভেজ ব্যাংকারের স্ত্রীর উদ্দেশে বলতে থাকেন, ‘আমরা আপনাকে আটকে রেখে ওকে (মোরশেদ) আনবো।’ ইশরাত জাহান চৌধুরী আরও বলেন, এ সময় ভবনটির নিচে নম্বর প্লেটবিহীন গাড়িতে হুইপপুত্র শারুন চৌধুরী ও বাচ্চু বসা ছিলেন।

এ বিষয়ে শারুন চৌধুরী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘১১ এপ্রিলের সংবাদ সম্মেলনে ইশরাত বললেন মোরশেদ তার পাওনাদারদের ২৫ কোটি টাকার বিপরীতে ৩৮ কোটি ফেরত দিয়েছেন। ঢাকায় শনিবারের (২৪ এপ্রিল) সংবাদ সম্মেলনে বললেন ৩৫ কোটি টাকা ফেরত দিয়েছেন। মূলত তিনি কারও দ্বারা প্রেসক্রাইভড হয়েই যে এসব বলছেন তা এখন স্পষ্ট। কারণ আমার সঙ্গে কখনো কোনো লেনদেন বা সামাজিক সম্পর্ক ব্যাংকার মোরশেদের সঙ্গে ছিল না। তাছাড়া মোরশেদের বাসায় যাওয়ার বিষয়ে দুই রকমের তথ্য দিয়েছেন তার স্ত্রী। কোনো গণমাধ্যমে তিনি বলছেন আমরা যে ওই বাসার নিচে ২০১৯ সালের মে মাসে গিয়েছিলাম তা তিনি শুনেছেন। আবার তিনি বলেছেন, তিনি দেখেছেন। কিন্তু ওখানে আমি কোনো কাজে কখনোই যাইনি।’

প্রসঙ্গত, ৭ এপ্রিল ভোরে নগরের পাঁচলাইশ থানাধীন মিমি সুপার মার্কেট সংলগ্ন হিলভিউ আবাসিক এলাকায় নাহার ভবনের ছয়তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে ওই ব্যাংক কর্মকর্তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি পূর্ব মাদারবাড়ির বাসিন্দা আবদুল মোমিন চৌধুরীর ছেলে।

ManaratResponsive

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।

ksrm