যৌন নির্যাতনে সারা দেশে চট্টগ্রামের স্থান দ্বিতীয়। গত ১২ মাসের হিসাবেও চট্টগ্রাম আছে দ্বিতীয় স্থানে। এর আগে আছে শুধু বরিশাল।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এবং জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) বাংলাদেশের সমন্বয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নারীর প্রতি সহিংসতা জরিপ-২০২৪ এর এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
জরিপে দেখা গেছে, জীবনে একবার হলেও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দেশের ৭৫ দশমিক ৯ শতাংশ নারী। গ্রামে এর হার ৭৬ শতাংশ এবং শহরে ৭৫ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে বিভাগওয়ারী বরিশালে নারী নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশি ৮১ দশমিক ৫ শতাংশ। এই হার সবচেয়ে কম সিলেটে ৭২ দশমিক ১ শতাংশ। যৌন নির্যাতনের হারও বরিশাল বিভাগে বেশি ৩৫ দশমিক ৭ শতাংশ। যেখানে জাতীয় পর্যায়ে যৌন নির্যাতনের হার ২৯ শতাংশ।
সহিংসতার শিকার নারীদের মধ্যে মাত্র ৭ দশমিক ৪ শতাংশ নারী আইনের আশ্রয় নেন। বাকি ৯৩ দশদিক ৬ শতাংশ নারী এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেন না। এ ছাড়া সহিংসতার শিকার ৬৪ শতাংশ নারী তাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া সহিংসতার কথা কারও সঙ্গেই শেয়ার করেন না।
জরিপে দেখা গেছে, বরিশালের পরেই যৌন নির্যাতন বেশি হয় চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৪ দশমিক ১ শতাংশ। এছাড়া খুলনায় ২৯ দশমিক ৯, ঢাকায় ২৭ দশমিক ৮, রাজশাহীতে ২৭ দশমিক ২, ময়মনসিংহে ২৩ শতাংশ, রংপুরে ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ, ও সিলেটে যৌন নির্যাতনের হার ২৮ দশমিক ২ শতাংশ। শহর ও গ্রামে যৌন নির্যাতনের হারে খুব বেশি পার্থক্য নেই। শহরে যৌন নির্যাতনের হার ৩১ দশমিক ১ এবং গ্রামে ২৮ শতাংশ।
গত ১২ মাসেও যৌন নির্যাতন বেশি হয়েছে বরিশালে। জাতীয় পর্যায়ে গত মাসে দেশে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৯ দশমিক ৪ শতাংশ নারী। সেখানে বরিশালে এর হার ১৩ দশমিক ২ শতাংশ। এর পরেই গত ১২ মাসে যৌন নির্যাতন বেশি হয়েছে চট্টগ্রামে ১১ দশমিক ২ শতাংশ।
এছাড়া গত ১২ মাসে ঢাকায় ৮ দশমিক ৭ শতাংশ, খুলনায় ৯ দশমিক ১ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৭ দশমিক ৬ শতাংশ, রাজশাহীতে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ, রংপুরে ৯ দশমিক ১ শতাংশ এবং সিলেটে ১০ দশমিক ৭ শতাংশ নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
গত ১২ মাসে গ্রামে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ এবং শহরে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
২০১১ এবং ২০১৫ সালের জরিপের পর তৃতীয়বারের মতো ২০২৪ সালের নারীর প্রতি সহিংসতার এই জরিপটি বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতার প্রকৃতি, মাত্রা এবং প্রভাব সম্পর্কে সবচেয়ে বিস্তৃত এবং সমসাময়িক প্রেক্ষাপটের প্রকৃত চিত্র উপস্থাপনকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
সিপি