সাতকানিয়ায় সাংবাদিকের ওপর পুকুরখেকোদের হামলার চেষ্টা, প্রাণনাশের হুমকি
শতবর্ষী গোদার পুকুর ভরাট করে উঠছে মার্কেট
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া পৌর সদরে শতবর্ষী গোদার পুকুর ভরাট করে মার্কেট নির্মাণের সংবাদ প্রকাশের জের ধরে সাতকানিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি সৈয়দ মাহফুজ-উন নবী খোকনের ওপর হামলার চেষ্টা চালিয়েছে পুকুরখেকোরা।
সোমবার (২৪ জুলাই) রাতে পৌর সদরের কলেজ রোড ও থানার সম্মুখে দফায় দফায় হামলার এ চেষ্টা চালানো হয়। পরে পুলিশ ধাওয়া দিলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
জানা গেছে, গত ১২ এপ্রিল থেকে সাতকানিয়া পৌরসদরের জনতা ব্যাংকের পেছনে শতবর্ষী গোদার পুকুর ভরাটের কাজ শুরু হয়। পুকুরটির একাংশের মালিক মৃত কবির আহমদের ওয়ারিশ কবির মোহাম্মদ মহসিন তার স্ট্যান্ডার্ড বিল্ডার্সের সঙ্গে উপজেলার বাইরে থেকে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর সহযোগিতায় পুকুরটি ভরাটযজ্ঞ চালান। ওই সময় একটি জাতীয় দৈনিকে পুকুর ভরাট নিয়ে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ হয়।
সবশেষ সংবাদ প্রকাশের জের ধরে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এলে তারা ‘বিশেষ প্রহরা’ বসিয়ে সাজানো সাক্ষ্য দেয় এই বলে— অর্ধশত বছর আগে পুকুরটি ভরাট হয়। এ নিয়েও পরে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সাতকানিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি সৈয়দ মাহফুজ-উন নবী খোকন অভিযোগ করেন, এরপর ক্ষিপ্ত হয়ে কবির মোহাম্মদ মহসিন তার চাচাত ভাই কবির মোহাম্মদ জুয়েলকে লেলিয়ে দিয়ে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করে। জুয়েল স্থানীয় কিশোরগ্যাংকে ভিড়িয়ে বিভিন্ন সময়ে তাকে অনুসরণ করতে থাকে।
জানা গেছে, সবশেষ সোমবার (২৪ জুলাই) রাতে সাংবাদিক সৈয়দ মাহফুজ-উন নবী খোকন ডাক্তার দেখিয়ে অসুস্থ অবস্থায় কলেজ রোডে রাতের খাবার খেতে একটি দোকানে ঢোকেন। ঠিক ওই সময় পুকুরখেকো চক্রটি অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে। সাংবাদিক খোকন এ সময় দ্রুত দোকান থেকে বেরিয়ে গিয়ে রিকশায় উঠতে চাইলে দুর্বৃত্তরা তাকে রিকশায় উঠতে বাধা দেয়। সাংবাদিক খোকন পরে কৌশলে কয়েক গজ দূরে থানার ভেতর আশ্রয় নিলে তারা থানার বাইরেই ওই দুর্বৃত্তরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাহারা বসায়।
বিষয়টি সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জকে জানালে পুলিশের একটি টিম বের হয়ে দুর্বৃত্তদের ধাওয়া দেয়। এতে তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
সাংবাদিক সৈয়দ মাহফুজ-উন নবী খোকন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘পুকুর ভরাট নিয়ে আমি শুরু থেকে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছি। এর আগে তারা আমাকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালায়। তাতে সফল না হয়ে কবির মোহাম্মদ মহসিন জুয়েলসহ একাধিকজনকে দিয়ে তদবির শুরু করে। তাতেও আমি থামিনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মহসিনের পরিকল্পনায় জুয়েল সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে আমার ওপর হামলার চেষ্টা চালিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এমনকি থানার বাইরে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাহারা বসাতেও তারা ভয় পায়নি। এ ঘটনায় আমি পেশাগত দায়িত্ব পালনে আরও বড় ধরনের কোন ঘটনার শঙ্কাবোধ করছি।’
সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ইয়াসির আরাফাত বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। তদন্তের পর তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’