করোনা ভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাপ মোকাবিলায় আক্রান্তদের জরুরি সেবায় চট্টগ্রাম নগরীর ১৬ থানায় ‘অক্সিজেন ব্যাংক’ চালুর নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।কোভিড ১৯ আক্রান্ত নগরবাসীর সহযোগিতায় গড়ে তোলা হয়েছে এই অক্সিজেন ব্যাংক। থানায় পৌঁছে গেছে অক্সিজেন সিলিন্ডারও। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোন ব্যক্তি নগরীর থানাগুলো থেকে এ সেবা পাননি।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, করোনা ভাইরাস দ্রুত সময়ের মধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তির ফুসফুসে সংক্রমিত হয়। এতে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায়। যথাযথ সময়ে অক্সিজেন সরবরাহ না থাকায় আক্রান্ত ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করছে। বিষয়টি বিবেচনা করে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীরের নির্দেশে প্রতিটি থানায় অক্সিজেন ব্যাংক গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
সিএমপির নির্দেশনা হচ্ছে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত যেকোন ব্যক্তির জরুরি প্রয়োজনে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে নগরীর যেকোন থানা থেকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হবে। অক্সিজেন শেষ হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট থানায় যোগাযোগের মাধ্যমে সেই সিলিন্ডার প্রয়োজনমত রি-ফিলও করা যাবে।
কিন্তু এ নির্দেশনার বাস্তবায়ন মিলেনি নগরীর থানাগুলোতে। অনেকেই অক্সিজেনের জন্য গেলেও থানায় গিয়ে কোন সাড়া পাচ্ছেন না। এমনটি ঘটেছে নগরীর বায়েজিদ থানায়। অনেক গ্রহীতা অক্সিজেন সেবা পাওয়ার জন্য থানায় গেলে থানায় কর্তব্যরত ডিউটি অফিসাররা বিষয়টি জানেন না বলে জানিয়েছেন। এতে অক্সিজেন প্রত্যাশীদের ভিতরে বিভ্রান্তি ও ক্ষোভ ছড়াচ্ছে। বিষয়টি জানতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সালেহ মো. তানভীরের মুঠোফোনে যোগোযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহির হোসেন মুঠোফোনে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার থানার জন্য আমি ৩টি সিলিন্ডার বরাদ্দ পেয়েছি। এটা স্টোর রুমে রাখা আছে। জরুরি প্রয়োজনে করোনা রোগীরা এটি ব্যবহারের জন্য নিতে পারবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাউকে এটি দেয়া হয়নি।’
একই বক্তব্য ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহসিনেরও। তিনি বলেন, ‘জনগণের মধ্যে এখনো এ বার্তা পুরোপুরি পৌঁছায়নি। কোন করোনা রোগী আসলে অবশ্যই আমরা অক্সিজেন সরবরাহ করব।’
বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার মুঠোফোনে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার থানাতেও অক্সিজেন সিলিন্ডার এসে পৌঁছেছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে বিতরন করা হয়নি। থানার ডিউটি অফিসার বিষয়টি ওয়াকিবাল না থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, না এটা ত হওয়ার কথা না। থানা থেকে অক্সিজেন সিল্ন্ডিার আমরা রোগীর প্রয়োজনে সরবরাহ করব। এটা থানার সব স্টাফকে অবগত করা হয়েছে। তবে কেউ নিতে গিয়ে ফেরত এসেছে এরকম হয়নি।’
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে নগরীর রীমা কমিউনিটি সেন্টারে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর। এসময় অতিরিক্ত কমিশনার শ্যামল কুমার নাথ, উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) বিজয় বসাক, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি-দক্ষিণ) শাহ মো. আব্দুর রউফ ছিলেন।
আইএমই/কেএস/এমএহক