জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চট্টগ্রামভিত্তিক বিতর্কিত শিল্পগ্রুপ এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনের বিরুদ্ধে দেড় হাজার কোটি টাকার মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান বাদী হয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলাটি দায়ের করেন। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গণমাধ্যমকে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এস আলম গ্রুপ ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের বিরুদ্ধে ৭৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
অপর দিকে তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনের বিরুদ্ধে ৭৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ১ হাজার ৪৫৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এসব মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪-এর ২৭ (১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, সাইফুল আলম মাসুদ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুর, সাইপ্রাস, ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া আইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। তবে আয়কর নথিতে তা অন্তর্ভুক্ত না থাকায়, এ সম্পদকে পাচার বলছে দুদক।
২০১৭ সালে মোহাম্মদ সাইফুল আলমের মালিকানাধীন চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরে সাইফুল আলমের বড় ছেলে আহসানুল আলমকে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ করা হয়। আর এই সময়ে ব্যাংকটি থেকে ঋণের নামে ১ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা বিতরণ করা হয়, যার বেশির ভাগই ঋণ হিসেবে নিয়েছে এস আলম গ্রুপ।
এ শিল্প গ্রুপটির ঋণ জালিয়াতির কথা প্রকাশ্যে এলেও তৎকালীন আওয়ামী সরকারের ঘনিষ্ঠ এস আলম গ্রুপের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় মুখে কুলুপ এঁটে ছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরে ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গনঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এস আলম গ্রুপের অর্থ কেলেঙ্কারির লাল ফিতায় বাঁধা ফাইল খুলতে শুরু করে দুদক।
ইসলামী ব্যাংকের অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় এস আলমের ছেলে ও ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আহসানুল আলমকে আসামি করে তিনটি মামলা করা হয়েছে। এরপর এস আলম সংশ্লিষ্টদের গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে তলব করে দুদক।
কেএ