মধ্যরাতে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রফিক আহমদের বাড়িতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযান চালিয়েছে। দুই ঘণ্টা ঘেরাও ও তল্লাশির পর কোনো অবৈধ কিছু না পেয়ে বাহিনী ফিরে গেছেন বলে খবর মিলেছে। অভিযান চলাকালে চেয়ারম্যানকে বাড়ির উঠানে একটি চেয়ারে বসিয়ে রাখা হয়। এ সময় মসজিদে ঘোষণা দেওয়া হলে এলাকাবাসী জড়ো হয়ে যৌথহিনীর গাড়ি অবরুদ্ধ করে রাখে।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) রাত ১২টার দিকে জুলধার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের অছির মোহাম্মদ পাড়ার চেয়ারম্যান বাড়িতে এই অভিযান চলে। কর্ণফুলী থানার ওসি মুহাম্মদ শরীফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মধ্যরাতে হঠাৎ সেনাবাহিনী ও পুলিশের একাধিক টিম কয়েকটি গাড়িতে এসে চেয়ারম্যানের বাড়ি ঘিরে ফেলেন। সেনা ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে এ সময় নারী কনস্টেবলও ছিলেন। রফিক চেয়ারম্যানকে বাড়ি থেকে বের করে উঠানে চেয়ারে বসিয়ে রাখা হয়। তার পরনে ছিল লুঙ্গি ও সাদা হাফহাতা গেঞ্জি, পায়ে স্যান্ডেল। এ সময় চেয়ারম্যানকে একটু বিব্রত আর চিন্তিত দেখা গেছে। এরপর যৌথবাহিনী ঘরবাড়ি তল্লাশি শুরু করে, যা চলে টানা দুই ঘণ্টা।
এ সময় মসজিদে ঘোষণা দিয়ে স্থানীয়দের বের হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এতে মুহূর্তেই জনতা জড়ো হয়ে একপর্যায়ে সেনাবাহিনীর গাড়ি অবরুদ্ধ করে রাখে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কর্ণফুলী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অনেক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এর মধ্যেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাড়ির ভেতরে দ্বিতীয় দফায় তল্লাশি চালায়। তবে কিছুই না পাওয়ায় শেষে চেয়ারম্যানকে ছেড়ে দিয়ে ফিরে যায় যৌথবাহিনী।
অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে, অভিযানটি মূলত চেয়ারম্যানের ছেলে মোহাম্মদ হারুনকে গ্রেপ্তার করতে পরিচালিত হয়েছিল। তার কাছে অবৈধ অস্ত্র আছে— এমন সন্দেহে তল্লাশি চালানো হলেও কিছু পাওয়া যায়নি। হারুন ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং তার বিরুদ্ধে সড়কে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে কর্ণফুলী থানার ওসি মুহাম্মদ শরীফ বলেন, ‘জুলধার রফিক চেয়ারম্যানের বাড়িতে যৌথ বাহিনীর অভিযান হয়েছে। তবে বিস্তারিত জানতে হলে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’
সেনাবাহিনীর অভিযানের বিষয়ে জানতে চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঞ্জুরের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
জুলধা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা রফিক আহমদ বলেন, ‘হ্যাঁ, আমার বাড়িতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ অভিযান চালিয়েছে, তবে কোনো সমস্যা হয়নি। তারা আমাকে আটক বা গ্রেপ্তার করেনি। আমি ভালো ও সুস্থ আছি। যৌথবাহিনী কেন এই অভিযান চালিয়েছে, সেটা তারাই ভালো জানে। তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় সম্পর্কে আমি কিছু জানি না।’
জেজে