চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ও সদ্য বহিষ্কৃত সৌরভ প্রিয় পালসহ আরও দুই জনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন এক গণমাধ্যমকর্মী।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন আদালত-৩ এ হুমকি দেওয়া ও মানহানির অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করে সাংবাদিক রানা নাহা।
মামলার অপর দুই আসামি হলেন—জাস এক্সোসরিস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল ওয়াজেদ সোহেল ও মো. হেলাল।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, রানা নাহা সরকারি সিটি কলেজ থেকে ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে টানা ১০ বছর সাংবাদিকতা পেশায় জড়িত আছেন।
গত ১ আগস্ট দুপুর ৩টায় পাহাড়তলী থানার কর্নেল জোন রোডে জাস এক্সেসরিস বাংলাদেশ লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিকতা নীতিমালা অনুযায়ী ‘বে-আইনি ও অনুমোদনহীন পলিথিন উৎপাদন ব্যবহার ও বিক্রয় করেছে প্রতিষ্ঠানটি’—এই মর্মে সংবাদের সঠিক তথ্য জানতে চাইলে মামলার ১ নম্বর আসামি জাস এক্সোসরিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল ওয়াজেদ সোহেল বলেন, তিনি নিজেও একজন সাংবাদিক, তার অনুমতি কি চট্টগ্রাম প্রতিদিনের অফিস থেকে নিতে হবে, এই বলে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এর দুই ঘণ্টা পর রানা নাহার মুঠোফোনে কল করেন মামলার ৩ নম্বর আসামি মো. হেলাল। তিনি বলেন, আপনি আমার মালিক থেকে এক কোটি টাকা চাঁদা চেয়েছেন। আপনি আওয়ামী লীগের দোসর, আপনাকে দেখে নেবো। তখন প্রতিবেদক বলেন, আপনার মালিকের সাথে কথাবার্তার সব রেকর্ড আমার কাছে আছে। আপনাদের কাছে যদি চাঁদাবাজির কোনো প্রমাণ থাকে আপনারা আইনানুগ ব্যবস্থা নেন।
এ ঘটনার তিন দিন পর ৩ আগস্ট বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সোসরিস সংগঠনে ‘জাস এক্সোসরিস বাংলাদেশ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল ওয়াজেদ সোহেল রানা নাহার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির করেছেন মর্মে একটি অভিযোগ দেন। তিনি সেখানে উল্লেখ করেন, সাংবাদিক রানা নাহা তার মুঠোফোনে কল করে বিভিন্ন কথা তুলে ধরে তার ‘প্রয়োজন’ মেটাতে বলেন।
৬ আগস্ট এই অভিযোগের কপি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করেন মামলার ২ নম্বর আসামি ও বহিষ্কৃত সাবেক ছাত্রদল নেতা সৌরভ প্রিয় পাল।
তিনি তার আইডি থেকে ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘চাঁদাবাজ নিউজ পোর্টালের কাজ দেখেন, এ রকম শত শত অভিযোগ চাঁদাবাজির চট্টগ্রাম প্রতিদিনের বিরুদ্ধে। ব্যক্তি লক্ষ্য করে চাঁদাবাজি ছাড়া এই পোর্টালের কোন এজেন্ডা নাই’, যা বাদি ও তার প্রতিষ্ঠানের মর্যাদাকে চরমভাবে ভূলুণ্ঠিত করেছে বলে অভিযোগ তোলেন রানা নাহা।
এ বিষয়ে রানা নাহা বলেন, আমি আমার সাংবাদিকতার নীতিমালা অনুযায়ী প্রাপ্ত তথ্যের সঠিকতা ও যথার্থতা যাচাইয়ের জন্য জাস এক্সোসরিস’র ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ফোন করি। কিন্তু আমি যাতে নিউজ করতে না পারি, সেজন্য আমাকে ভাড়াটে গুণ্ডা দিয়ে মুঠোফোনে কল করে চাঁদাবাজ ও আওয়ামী লীগের দোসর বলেন এবং দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে সেই অভিযোগের কপি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। আমাকে ও আমার প্রতিষ্ঠানকে চাঁদাবাজ উল্লেখ করে ফেসবুকে পোস্ট করেন বিতর্কিত ও বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতা সৌরভ প্রিয় পাল। বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় আছি।