চট্টগ্রামে সমন্বয়ক পরিচয়ে অপহরণের ঘটনায় ‘ভুলভাবে গ্রেপ্তার’ যুবকের জামিন

চট্টগ্রামে ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে একটি গার্মেন্টেসের এজিএমকে অপহরণের ঘটনায় গ্রেপ্তার রিশতি বিন ইউসুফ নামে যুবককে জামিন দিয়েছেন আদালত। শুনানিতে ভুক্তভোগীর স্ত্রী ও গাড়ির ড্রাইভার জানান, অপহরণের সময় সহযোগিতা করতেই রিশতিকে ডেকেছিলেন তারা। ওই সময় তাকে গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়। পরে ভিডিও ফুটেজে রিশতিকে দেখে মামলার আসামি করে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় অপর তিন আসামির একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রোববার (১৬ মার্চ) মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ শুনানির পর রিশতি বিন ইউসুফকে জামিন মঞ্জুর করেন।

মামলার অপর তিন আসামি হলেন—নগরীর উত্তর কাট্টলীর নাজমুল আবেদিন, সিটি গেট এলাকার নইমুল আমিন ইমন (২২) ও সিডিএ ১ নম্বর এলাকার আরাফাত হোসেন ফহিম (২২)।

জানা গেছে, ৬ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে কর্নেলহাট সিডিএ আবাসিক এলাকা থেকে প্যাসিফিক জিন্সের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) আবেদিন আল মামুনকে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে অপহরণ করা হয়। অপহরণকারীরা তাকে পতেঙ্গা সাগরপাড়, পাহাড়তলীর কর্নেলহাট জোন্স রোড ও আকবরশাহ্ থানার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরাতে থাকে। ওই সময় আবেদিনের গাড়িচালক জুয়েলও তাদের হাতে জিম্মি ছিলেন। পরে অপহরণকারীরা আবেদিনের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার লিলি বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করে মুক্তিপণ হিসেবে নগদ পাঁচ লাখ টাকা এবং ১৫ লাখ টাকার একটি ব্যাংক চেক আদায় করে।

পরে পাহাড়তলী জোন পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের যৌথ অভিযানে অ্যাপোলো ইম্পেরিয়াল হসপিটালের সামনে থেকে আবেদিন ও জুয়েলকে উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় নাজমুল আবেদিন (২৪), নইমুল আমিন ইমন (২২), সিডিএ ১ নম্বর এলাকার আরাফাত হোসেন ফহিম (২২) ও রিশতি বিন ইউসুফকে (২৩) গ্রেপ্তার করা হয়।

তবে গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে রিশতিকে ভুলে গ্রেপ্তার করা হয় বলে আদালতের শুনানিতে প্রমাণিত হয়। রোববার শুনানিতে জানা গেছে, রিশতি ভুক্তভোগীর স্ত্রী ও ড্রাইভারের অনুরোধে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। এরপর আদালত রিশতির জামিন মঞ্জুর করেন।

ভুক্তভোগীর ড্রাইভার জুয়েল জানান, অপহরণকারীরা যখন আবেদিন আল মামুনকে গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি একা অসহায় বোধ করায় রিশতিকে গাড়িতে তুলেছিলেন।

ভুক্তভোগীর স্ত্রী ফাতেমা আক্তার লিলি বেগম আদালতে জানান, রিশতি তাদের আত্মীয় এবং প্রতিবেশি ছিলেন। তিনি সাহায্যের জন্য রিশতিকে ডেকেছিলেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে জানান, সিসিটিভি ফুটেজে রিশতিকে অন্যদের সঙ্গে দেখা যাওয়ায় আসামি করা হয়েছিল। তবে মামলার তদন্ত এগোনোর পর সব তথ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ করে মনে হচ্ছে, রিশতি আসলেই ভুক্তভোগীর পরিবারকে সহযোগিতার জন্য ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন।

আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

রিশতির জামিনের শুনানিতে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির এডহক কমিটির সদস্য শামসুল আলমসহ ফটিকছড়ির বেশ কয়েকজন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm