জাল দলিলে চট্টগ্রামের এনজিওকে আড়াই কোটি টাকা ঋণ, বন্ধকী জমিও জাল

তদন্তে ব্যাংক–এনজিওর যোগসাজশ

চট্টগ্রামে জাল দলিল, ভুয়া মালিক আর যোগসাজশের জটিল বৃত্তে ব্যাংক ঋণ আত্মসাতের একটি ঘটনা ফের আলোচনায় উঠে এসেছে।

রোববার (২৩ নভেম্বর) দুদকের চট্টগ্রাম-১ কার্যালয়ে দায়ের হওয়া মামলায় উঠে এসেছে, নওজোয়ান নামের একটি এনজিওকে ভুয়া কাগজপত্রে আড়াই কোটি টাকা ঋণ অনুমোদনের পেছনে ব্যাংক কর্মকর্তা ও এনজিও প্রধানের সরাসরি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ।

দুদক জানায়, কৃষি ও সোলার খাতে পাঁচ কোটি টাকার ঋণের জন্য নওজোয়ান এনজিও ২০১৫ সালে আবেদন করে। সেই আবেদনে সংগঠনের সদস্য মো. ফরিদুল হাসানের নামে ৩০ শতক জমি বন্ধক রাখার কথা উল্লেখ করা হয়। তদন্তে দেখা যায়, ব্যাংক ও রেজিস্ট্রি অফিসে যে ব্যক্তিকে ফরিদুল হিসেবে উপস্থাপন করা হয়, তিনি প্রকৃত মালিক নন। জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করেও নিশ্চিত হয়, দলিলে ব্যবহৃত এনআইডির তথ্য আসলে অন্য ব্যক্তির। ভুয়া পরিচয়ে দলিল ও আমমোক্তারনামা সম্পাদন করে ঋণের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া হয়।

দুদক বলছে, এনজিওর প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ ইমাম হোসেন চৌধুরী নিজেই ভুয়া ফরিদুলকে ব্যাংক ও রেজিস্ট্রি অফিসে হাজির করেছিলেন এবং পুরো প্রতারণায় সহযোগিতা করেন।

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মুরাদপুর শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক কে এম এজাজ এবং সাবেক ঋণ কর্মকর্তা, বর্তমানে এসইও (কর্পোরেট ক্রেডিট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিভিশন) কৌশিক রায় চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ—জমির মালিকানা ও পরিচয় যাচাই ছাড়া, এমনকি মাঠ পর্যায়ে তদন্ত ছাড়াই ঋণের সুপারিশ করা। পরে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় আড়াই কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করে নওজোয়ানের নামে মঞ্জুরিপত্র জারি করে।

দুদকের উপসহকারী পরিচালক মুহাম্মদ হামেদ রেজা বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন বলে জানান দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ। মামলায় আসামি করা হয়েছে ইমাম হোসেন চৌধুরী, এজাজ এবং কৌশিক রায় চৌধুরীকে। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ ধারায় এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭–এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদক বলেছে, তদন্তে নতুন তথ্য এলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ksrm