বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকা ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর থেকে পণ্য খালাস সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। বন্দরের বহির্নোঙরে ২০টি বড় জাহাজে খালাসের অপেক্ষায় আটকে আছে প্রায় সাড়ে চার লাখ টন পণ্য। এছাড়া বন্দরের বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে ৩৫টি জাহাজে বোঝাই করা অর্ধলাখ টন পণ্য আটকে আছে।
এছাড়া কর্ণফুলী নদীর ১৬টি ঘাটসহ দেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথে ৭৩৮টি জাহাজে আটকা পড়েছে প্রায় ১০ লাখ টনেরও বেশি পণ্য। এসবের মধ্যে রয়েছে গম, মসুর ডাল, মটর ডাল, সয়াবিন বীজ, সার, কয়লা ও সিমেন্টের কাঁচামাল ক্লিংকার বিভিন্ন পণ্য।
চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে সারবোঝাই ‘এমভি আল-বাখেরা’ জাহাজে সাত খুনের ঘটনার পর বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা থেকে এ কর্মবিরতি শুরু করেন নদীপথে পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত লাইটার জাহাজের শ্রমিকেরা।
লাইটার জাহাজ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা জানিয়েছে, যশোরের নোয়াপাড়া, নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর, মেঘনা ঘাট ও সিরাজগঞ্জের ঘোড়াশালে সবচেয়ে বেশি জাহাজ আটকা পড়েছে।
নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের চার দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকার পদক্ষেপ না নেওয়ায় এই ধর্মঘট শুরু হয়েছে। দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—প্রত্যেক নিহত শ্রমিকের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ, এবং নদীপথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাঈদ আহমেদ জানান, ‘৮০০ জাহাজে আটকা পড়া পণ্যের পরিমাণ ১০ লাখ টনেরও বেশি। দ্রুত সমাধান না হলে দেশের বাজারে পণ্যের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।’
ডিজি শিপিংয়ের পক্ষ থেকে আলোচনা চললেও ধর্মঘট কবে শেষ হবে তা নিশ্চিত নয়। সংগঠনের নেতা শাহ আলম জানান, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কোনো নৌযান চলবে না।
এই অচলাবস্থার ফলে দেশের অর্থনীতি বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা।
জেজে/ডিজে