চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লার প্রেসে তৈরি হচ্ছে মার্কিন ডলার ও ইউরো নোট। এরপর সেসব নোট ই-কমার্স সাইট ‘দারাজ’র মাধ্যমে বিক্রি হতো দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এভাবে গত চার মাস ধরে অবৈধ জালনোটে ব্যবসা করে আসছিল একটি চক্র।
চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাট থেকে সেই চক্রের মূলহোতাসহ দুইজনকে আটক করেছে র্যাব। একইসঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে ২০ কোটি টাকা মূল্যের জাল ডলার ও ইউরো নোট। এছাড়া উদ্ধার করা হয়েছে সৌদিআরব ও দুবাইয়ের জালনোটও।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বহদ্দারহাট এক কিলোমিটার এলাকার ‘নূরনগর হাউসিং সোসাইটি’র একটি বিল্ডিংয়ের ফ্ল্যাটে এ অভিযান চালায় র্যাব-৭।
আটকদের একজন চক্রের মূলহোতা হলেন—তানজীব। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে জাল টাকার ব্যবসা করে আসছিলেন। সিলেটে গ্রেপ্তার জাল নোট কারবারিদের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে আটক অপরজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে , নূরনগর হাউসিং সোসাইটির একটি বিল্ডিংয়ের ফ্ল্যাটের বহুদিন ধরে নকল ডলার ও ইউরো নোট ডাইসসহ তৈরি করা হতো। এরপর আন্দরকিল্লার ‘অংকুর প্রিন্টার্স’ নামে একটি ছাপাখানা থেকে এগুলো ছাপানো হতো। এসব জালনোট ‘দারাজ’র মাধ্যমে বিক্রি করা হতো দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তামজিদ স্বীকার করেছেন, শুটিংয়ের নাম করে নগরীর আন্দরকিল্লার ‘অংকুর প্রিন্টার্স’ থেকে এসব নোট তৈরি করা হতো। পরে সেগুলো দারাজের মাধ্যমে অনলাইনে বিক্রি করা হতো। গত চার মাস ধরে তিনি এ অবৈধ জাল মুদ্রা তৈরির চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সম্প্রতি সিলেটে একটি অভিযানে জাল টাকা উদ্ধার করা হয়। সেখানকার র্যাবের তথ্যের ভিত্তিতে বাকলিয়া এলাকায় অভিযান চালানো হয়।
তানজীব দাবি করছেন, জাল নোটগুলো শুটিংয়ের জন্য তৈরি। তবে অল্প সংখ্যক নোটে ‘শুটিং’ শব্দ লেখা থাকলেও অনেক নোটে তা লেখা ছিল না।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, কেউ শুটিং বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে জালনোট তৈরি করার এখতিয়ার রাখে না।
র্যাব–৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, ‘অভিযানে আনুমানিক ২০ কোটি টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ডলার, ইউরো, দিরহাম, রিয়াল এবং বাংলাদেশি মুদ্রা ছিল। তানজীবের বাসা থেকে এসব জাল মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তিনি আন্দরকিল্লার অংকুর প্রিন্টার্সে জাল মুদ্রা ছাপাতেন। পরে সেখানে অভিযান চালিয়ে আরও একজনকে আটক করা হয়। জাল মুদ্রা তৈরির পেছনে আরও কেউ জড়িত কি না—তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’
আরএ/ডিজে