দ্রুত ও নিরাপদে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় সরাসরি পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা চালু হওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের জ্বালানি খাত নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। ঘণ্টায় ৩৫০ মেট্রিকটন পরিবহণ সক্ষমতা নিয়ে এই ভূগর্ভস্থ প্রকল্প বিপিসির বার্ষিক খরচ কমাবে এবং তেল চুরি ও সিস্টেম লস প্রায় শূন্যে নামিয়ে আনবে।
ভূগর্ভস্থ এই পাইপলাইন ২২টি নদী ও খালের নিচ নিয়ে এসেছে। পুরো রুটে পাম্পিং স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে মোট ৯টি।
সফল প্রাক-কমিশনিং সম্পন্ন হওয়ায় শনিবার (১৬ আগস্ট) চট্টগ্রামের গুপ্তাখালে পদ্মা অয়েল কোম্পানির ডেসপাস টার্মিনালে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন জ্বালানি সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এবং সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশনের প্রধান মেজর জেনারেল মুহাম্মদ হাসান উজ-জামান।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের বাস্তবায়নে এবং সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের নির্মাণে ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ভূগর্ভস্থ পাইপলাইন চট্টগ্রাম থেকে ফেনী, কুমিল্লা, চাঁদপুর ও মুন্সীগঞ্জ হয়ে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি ২২টি নদী ও খাল অতিক্রম করেছে এবং নয়টি স্টেশন ও আধুনিক ডিপো দ্বারা সংযুক্ত।
২০১৮ সালে অনুমোদিত ২ হাজার ৮৬১ কোটি টাকার প্রকল্পটি করোনা পরিস্থিতির কারণে বিলম্বিত হয়ে চলতি বছরের মার্চে শেষ হয়, যেখানে খরচ দাঁড়ায় ৩ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা। পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রতি ঘণ্টায় ৩৫০ মেট্রিকটন এবং বছরে সর্বোচ্চ ৫ মিলিয়ন মেট্রিকটন তেল পরিবহন সম্ভব হবে। আগে নৌপথে ট্যাংকারে যেখানে ৪৮ ঘণ্টা লাগতো, এখন সময় লাগবে মাত্র ১২ ঘণ্টা। ফলে বিপিসির বার্ষিক পরিবহন খরচ কমে দাঁড়াবে ৯০ কোটি টাকায়, সাশ্রয় হবে অন্তত ২২৬ কোটি টাকা। পাশাপাশি সিস্টেম লস ও চুরি প্রায় শূন্যে নামবে।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় স্থাপিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষে ২৪ ঘণ্টা পুরো পাইপলাইন পরিবহণ প্রক্রিয়া ও নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করা হবে।
প্রকল্প পরিচালক মো. আমিনুল হক জানিয়েছেন, পরীক্ষামূলকভাবে ইতোমধ্যে পাঁচ কোটি লিটার ডিজেল কোনো ক্ষতি ছাড়াই নিরাপদে পরিবহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এখন রিজার্ভার থেকে দেশের বিভিন্ন ডিপোতে তেল দ্রুত ও নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।’
জেজে/সিপি