চট্টগ্রামের কর্ণফুলীে প্রতারণার শিকার হয়েছেন গাউছিয়া কমিটির সদস্য সচিব ও এক সদস্য। সিআইডি ও ডিবি পরিচয়ে ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে প্রতারক চক্র দেড় লাখ টাকা বিকাশ-নগদের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগীরা হলেন—নুর মোহাম্মদ ও মো. খোরশেদ আলম। তারা কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের বাসিন্দা।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি দু’দফায় তারা প্রতারণার শিকার হন।
এ বিষয়ে প্রতিকার চাইতে ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকালে ভুক্তভোগীরা সিএমপি পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। একইসঙ্গে সিএমপি বন্দর জোনের ডিসি, সিআইডির সাইবার ক্রাইম সেন্টার এবং কর্ণফুলী থানায় অভিযোগপত্র জমা দেন। সন্ধ্যায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার কথাও জানান তারা।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে হাবিবুর রহমান নামে একজন ব্যক্তি সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয়ে ০১৮৬১৪৯৪১৫৩ নম্বর থেকে ফোন করেন। তিনি জানান, জামায়াত-শিবির সংশ্লিষ্ট অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলা থেকে বাঁচতে দ্রুত ১ লাখ ১ হাজার ৫০০ টাকা নির্দিষ্ট নম্বরে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কথা না শুনলে গ্রেপ্তার করার হুমকিও দেন।
পরে ‘ডিবি আরিফ’ পরিচয়ে আরেক প্রতারক ০১৮৮৭৩৭৪৮৬২ নম্বর থেকে ফোন করে দ্রুত টাকা পাঠানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এই ভয়ভীতিতে পড়ে মো. খোরশেদ আলম নগদ এবং বিকাশে পর্যায়ক্রমে ১ লাখ ১ হাজার ৫০০ টাকা পাঠান। একইভাবে নুর মোহাম্মদকেও ফোন দিয়ে ৫০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠাতে বাধ্য করে প্রতারকরা।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, কর্ণফুলীর মইজ্জ্যারটেক ও নতুন ব্রিজের নিচের বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে তারা টাকা পাঠিয়েছেন। পরে প্রতারকদের নম্বর বন্ধ পাওয়ার পর বুঝতে পারেন যে, তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
এ বিষয়ে কর্ণফুলী থানার ওসি মুহাম্মদ শরীফ বলেন, ‘বিষয়টি মৌখিকভাবে শুনেছি। তবে এখনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। প্রতারক চক্রটি সিআইডির অনেক কর্মকর্তাকেও এমনভাবে হুমকি দিয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেবো।’
সিএমপি কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের ইন্সপেক্টর মো. আফতাব হোসেন বলেন, ‘বিকাশে প্রতারণা বাড়ছে, বিভিন্ন চক্র ভিন্ন পরিচয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রতারকদের সিম অন্যের নামে নিবন্ধিত ও লোকেশন দূরবর্তী এলাকায় থাকে। অনেক সময় ভুক্তভোগী অভিযোগ বা মামলা না করায় সেবা প্রদানেও জটিলতা তৈরি হয়।’
সিএমপি বন্দর জোনের মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান বলেন, ‘ডিবিতে এসআই আরিফ নামে কোনো কর্মকর্তা নেই। এছাড়া কর্ণফুলীতে গত কয়েক মাসে ডিবি পুলিশ কোনো অভিযান পরিচালনা করেনি। কেউ লিখিতভাবে অভিযোগ দিলে আমরা বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
গত ১১ ফেব্রুয়ারি সিএমপি কর্ণফুলী থানার ফেসবুক পেজে একটি সতর্কবার্তা প্রকাশ করা হয়। সেখানে জানানো হয়, থানার নামে কেউ যদি মামলা বা গ্রেপ্তার বাণিজ্যের অপচেষ্টা চালায়, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া থানায় তালিকাভুক্ত বলে গুজব ছড়িয়ে যারা ফায়দা লুটতে চায়, তাদের বিরুদ্ধেও দ্রুত আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
জেজে/ডিজে