কর্ণফুলীতে ব্যবসায়ীর ট্রেড লাইসেন্সে মৃত চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর

চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে একটি ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করা হয়েছে মৃত চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরে। এ ঘটনার চার মাস পর প্রশাসনিক কর্মকর্তা একই নম্বরে আরেকটি ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করেন, যেটিতে ছিল না ওই চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর।

আবার যে সিরিয়ালের ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছে, সেটির বান্ডিলও পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তা। তবে এ ঘটনায় তিনি থানায় কোনো সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেননি।

জানা গেছে, উপজেলার ১ নম্বর (ক) জুলধা ইউনিয়ন পরিষদের একটি ট্রেড লাইসেন্সে প্রয়াত চেয়ারম্যান হাজী মুহাম্মদ নুরুল হকের স্বাক্ষর ছিল। কিন্তু এই চেয়ারম্যান ৭ মাস আগে ২০২৪ সালের ১২ জুলাই স্ট্রোকজনিত রোগে মৃত্যুবরণ করেন। অথচ ওই ট্রেড লাইসেন্সে তার স্বাক্ষরসহ ২০২৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে।

হাজী মুহাম্মদ নুরুল হক ২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জুলধা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি শপথগ্রহণের পর তিনি ২ বছর ৫ মাস দায়িত্ব পালন করেন।

প্রতিবেদকের হাতে থাকা ওই ট্রেড লাইসেন্সের ক্রমিক নম্বর ৭৫৫ এবং লাইসেন্স নম্বর ৭৭/২০২৪-২০২৫। এতে মালিক হিসেবে খতিজা বেগমের নাম, ঠিকানা, এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসাবে মো. রায়হান ডেইরি ফার্ম উল্লেখ রয়েছে। নবায়ন ফি ৫৭৫ টাকা পরিশোধ দেখানো হয়েছে।

১১-০১-২০২৪ এর ট্রেড লাইসেন্সটি গ্রাহক কে সরবরাহ করেনি। তাই চেয়ারম্যান বেঁচে থাকলেও স্বাক্ষর নাই। প্রতিবেদকের ধারণা, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর এর সনদটি নিয়ে অনুসন্ধান করায় এটি সচিব কৌশলে তৈরি করে প্রতিবেদক কে পাঠিয়েছেন। এটা হতে পারে। আর উপরের সনদটিতে কোন টাকার পরিমাণ নেই। তার মানে এটাও ভুয়া বানানো

এর আগে ইউপি সচিব বর্তমানে পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম একই ক্রমিক নম্বরের আরেকটি ট্রেড লাইসেন্স সরবরাহ করেন। সেটিতে দেখা গেছে, একই ব্যক্তির নামে ২০২৪ সালের ১১ জানুয়ারিতে লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছে। তবে ওই সময় চেয়ারম্যান বেঁচে থাকলেও তার স্বাক্ষর ট্রেড লাইসেন্সটিতে। এছাড়া ওই লাইসেন্সে কোনো টাকার পরিমাণও উল্লেখ নেই।

জুলধা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি তদন্তের আশ্বাস দিয়ে জানান, ৭৫৫ সিরিয়ালের ট্রেড লাইসেন্স বান্ডিলটি পরিষদে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে নিয়ম অনুযায়ী জিডি করার কথা থাকলেও তিনি তা করেননি।

তিনি বলেন, ‘জুলধা ইউনিয়ন পরিষদে নতুন যোগদান করেছি আমি। এখন আমরা অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করছি। পুরোনো ম্যানুয়াল লাইসেন্স কেউ হয়তো জালিয়াতি করে ব্যবহার করছে।’

এ বিষয়ে জানতে জুলধা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রয়া ত্রিপুরার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. নোমান হোসেন বলেন, ‘এটি গুরুতর অপরাধ। এ ধরনের অভিযোগ সত্য হলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জেজে/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm