s alam cement
আক্রান্ত
১০২২৪৫
সুস্থ
৮৬৮৫৬
মৃত্যু
১৩২৫

লুকোচুরি শেষে চবির ‘ডি’ ইউনিটের ফল বেরোতেই উঠল ‘মিডনাইট ডাকাতি’র অভিযোগ

0

নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে প্রকাশ করা হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ডি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল। তবে ওয়েবসাইটে প্রকাশিত উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সংখ্যার সাথে কো-অর্ডিনেটরের দেওয়া তথ্যের মিল পাওয়া যায়নি। তবে বরাবরের মতোই এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সুস্পষ্ট কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেল সূত্রে জানা যায়, শনিবার (৬ নভেম্বর) রাত পৌনে ১২টায় ডি ইউনিটের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে ৩৬ হাজার ৬২৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৯ হাজার ৫৮৯ জন। যা শতকরার হিসেবে ২৬.৪৭ শতাংশ। বিষয়টি আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেছেন।

তবে বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) ‘ডি’ ইউনিটের কো-অর্ডিনেটর ও সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী জানিয়েছিলেন, ৩৬ হাজার ৬২৪ জন পরীক্ষর্থীর মধ্যে ১০ হাজার ৩০১ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। বাকিরা ন্যূনতম ৪০ নম্বর না পেয়ে অনুত্তীর্ণ হয়েছেন। পাশের হার ২৮ দশমিক ১৩ শতাংশ।

উত্তীর্ণদের সংখ্যার তারতম্যের বিষয় জানতে চাইলে আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের কাছে গতকাল যে ফলাফল এসেছে, আমরা তাই-ই প্রকাশ করেছি। এটাই চূড়ান্ত।

অন্যান্য ইউনিটের পরীক্ষা শেষ হওয়ার অনধিক দুই দিনের মধ্যে বিভিন্ন ইউনিটের ফল প্রকাশ হয়েছে। তবে ডি ইউনিটের পরীক্ষার ফল ৬ দিন পর প্রকাশ করা হল। গত ৩০ ও ৩১ অক্টোবর প্রতিদিন সকাল-বিকেল দুই শিফটে ডি ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই ইউনিটে আসন রয়েছে ১ হাজার ১৬০টি।

ডি ইউনিটের পরীক্ষা নিয়ে কেন অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হল— এ বিষয়ে জানতে ‘ডি’ ইউনিটের কো-অর্ডিনেটর ও সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকীকে মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল ধরেননি। এর আগে আরও দুইদিন কল দিয়ে তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

এদিকে ফলাফল প্রকাশের পরই ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা প্রকাশিত ফলাফলে অসন্তোষ জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেরিফাইড ফেসবুকে পেজে ফলাফল পোস্ট করার পর কয়েক হাজার শিক্ষার্থী সেখানে মন্তব্য করেন।

তাদের অধিকাংশেরই দাবি, তারা প্রত্যাশার তুলনায় অনেক কম নম্বর পেয়েছেন, যা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আবার কেউ ভালো পরীক্ষা দিয়েও ‘অনুত্তীর্ণ’ হয়েছেন বলে দাবি করেছেন। তাদের অভিযোগ, ফল নিয়ে কারচুপির কারণেই ঘোষণার পরেও সঠিক সময়ে ফল প্রকাশ করেনি কর্তৃপক্ষ।

এম এইচ রিফাত নামের একজন লিখেছেন, ‘চবি ডি ইউনিট কমিটিকে তো জবাবদিহি করাতে পারব না, শিওর ভাল পরীক্ষা দিয়ে এত রক্ত পানি করা প্রিপারেশনে কেন আমার রেজাল্ট এত খারাপ হল চান্স কেন পেলাম না। কিন্তু ঠিকই বাস থেকে নেমে বাসায় হাজার টা প্রশ্ন হাজারটা কথার সম্মুখীন হতে হবে? হ্যাঁ দিন শেষে আমিই ফাঁকিবাজ।’

সাজিদ মাহমুদ নামের আরেকজন লিখেছেন, ‘৭ দিনের ভাগ বাটোয়ারার পর প্রকাশিত হলো বহুল আকাঙ্খিত রেজাল্ট। যেখানে ৭০+ সঠিক হওয়ার পরও অদৃশ্য শক্তির আছড়ে জিপিএসহ ৬০ আসে।’

আব্দুর রহিম আলভি নামের একজন লিখেছেন, ‘এতদিন পর এইসব বা**র রেজাল্ট দেওয়ার কি দরকার ছিলো, পরীক্ষা যদি খারাপ হতো তাহলে মন কে বুঝাতে পারতাম! ওএমআর শিটেও কোনো ভুল করিনি! আমার রুমের আমার আশেপাশের কারো সিরিয়ালও আসেনি! অনেকের মন্তব্য দেখে বুঝলাম নিজের ফলাফলসহ আশেপাশের কারো সিরিয়ালই আসেনি। মিডনাইট ডাকাতি!’

রায়জেল ইসলাম লিখেন, ‘উল্টাপাল্টা রেজাল্ট দেওয়ার জন্য এতদিন ওয়েট করায় নাটক করছে। আরে জিপিএ ছাগাও ৬৫+ মার্ক আসে সিওর। কিন্তু রেজাল্টে জিপিএসহ ৬৩। আমার গণনাতে যদি ভুল হয়, সর্বোচ্চ ১/২ নম্বর এদিক সেদিক হবে। তাই বলে এত পার্থক্য!’

শাহাদাত হোসাইন লিখেছেন, ‘বাকরুদ্ধ! নিজের মনকে কোনোভাবেই বুঝাইতে পারছি না। চবিকে নিয়ে আমার এতো দিনের স্বপ্ন শেষ! পরীক্ষা খারাপ হলে নিজের মনকে বুঝাইতে পারতাম। পরীক্ষা দিয়ে আসি সবগুলো উত্তর মিলাইছি যেখানে ৬৪-৬৫ টা কারেক্ট হইছে, নেগেটিভ বাদ দিয়েও জিপিএ সহ যেখানে ৭৫+ থাকার কথা সেখানে রোলই আসে নাই! আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম…এতো দিনের কষ্ট সব শেষ!’

তবে শিক্ষার্থীদের এসব অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভারপ্রাপ্ত প্রফেসর এস এম মনিরুল হাসান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘পুরোপুরি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফল প্রকাশ করা হয়নি। রেজাল্ট প্রকাশ হওয়ার পর যাতে কেউ কথা বলতে পারে সেজন্য নির্ভুল ফলাফল দিতে রেজাল্ট একবার আইসিটিতে দিয়ে আবার ফেরত আনা হয়েছে।’

শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, চূড়ান্ত স্বচ্ছতার সাথে ফলাফল তৈরি করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই।

এমআইটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।

ksrm