চট্টগ্রামের নতুন ফিশারিঘাট থেকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে ‘এফভি খাজা আজমীর’ নামের কাঠের মাছ ধরার ট্রলারটি সাগরের উদ্দেশে যাত্রা করে। এরপর দুই মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে, কিন্তু ট্রলারটির আর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। ট্রলারে থাকা ১৮ মাঝিমাল্লা এখনো নিখোঁজ। তাঁদের মধ্যে ট্রলারের মালিক আলী আকবরও আছেন।
শেষ যোগাযোগ সেই রাতেই
ট্রলারটি সাগরে যাওয়ার দিন রাত পৌনে ১০টার দিকে আলী আকবরের সঙ্গে শেষবারের মতো কথা হয় তার স্ত্রী সেলিনা আক্তারের। তিনি জানান, স্বামী তাঁকে শুধু দোয়া করতে বলেছিলেন। ওই কথোপকথনের পর থেকেই বন্ধ হয়ে যায় সব যোগাযোগ। পরিবার ভেবেছিল, হয়তো নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে যোগাযোগ হচ্ছে না। দিন গড়াতে গড়াতে সপ্তাহ পেরোলেও আর কোনো সাড়া মেলেনি।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর সেলিনা আক্তার সদরঘাট নৌ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তবু অনুসন্ধানে কোনো অগ্রগতি হয়নি। নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড বা কোনো সংস্থাই ট্রলারটির অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেনি।
কোথায় গেল ১৮ মাঝিমাল্লা
নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে কক্সবাজার পৌরসভার নুনিয়াছড়ার ছয়জন, চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা ইউনিয়নের দুইজন, আর বাকিরা কক্সবাজারের মহেশখালীর বাসিন্দা। পরিবারের সদস্যরা প্রতিদিন সদরঘাট এলাকায় গিয়ে ট্রলার আসার খোঁজ নেন। কেউ কেউ নিয়মিত ফিশারিঘাটে দাঁড়িয়ে থাকেন, যদি হঠাৎ কোনো সংবাদ পাওয়া যায়।
নৌ পুলিশের অনুসন্ধান
সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, ট্রলার নিখোঁজ হওয়ার পর বিষয়টি কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী এবং বিজিবিকে অবহিত করা হয়েছে। অনুসন্ধান চলছে। তিনি বলেন, সাগরে গেলে কখনো কখনো ঝড়ের কারণে ট্রলার ভেসে যেতে পারে বা সীমান্ত অতিক্রম করে অন্য দেশের জলসীমায় ঢুকে পড়তে পারে। এ সম্ভাবনাও তদন্তে বিবেচনায় রাখা হয়েছে। চট্টগ্রামের দক্ষিণ কোস্টগার্ডের অপারেশন ল্যান্স কমান্ডার ওমর ফারুকের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ফেরার অপেক্ষায় পরিবারগুলো
দুই মাস ধরে অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে নিখোঁজ ১৮ জেলের পরিবারের। তাঁদের প্রত্যাশা, যেভাবেই হোক ফিরে আসবেন প্রিয় মানুষগুলো। সেলিনা আক্তারের কথায়, জীবন্ত মানুষসহ একটি ট্রলার হঠাৎ করে হারিয়ে যাওয়া বিশ্বাস করা কঠিন।
জেজে/সিপি


