চট্টগ্রামের হালিশহরের একটি বহুতল ভবনের নবম তলায় বসানো হয়েছিল অবৈধ ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল (ভিওআইপি) ব্যবসার আস্তানা। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং এনটিএমসি’র তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত র্যাব-৭ এর অভিযানে সেখান থেকে জব্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সরঞ্জাম ও ১০ হাজারের বেশি সিমকার্ড। আটক করা হয়েছে চক্রটির মূলহোতাকে।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১১টার দিকে র্যাব-৭ অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করে ৩০টি অবৈধ সিম বক্স, ১০টি সার্ভার এবং টেলিটক ও এয়ারটেলের প্রায় ১০ হাজার সিম।
র্যাব-৭ এর চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-অধিনায়ক মেজর মো. সানরিয়া চৌধুরী জানান, ‘আটক ব্যক্তি ওই সাততলা ভবনের তৃতীয় তলায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন এবং ১১ হাজার টাকায় ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েই অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা পরিচালনা করতেন। একটি রুমে সার্ভার ও সিম বক্স বসিয়ে গোপনে এই কার্যক্রম চালাতেন।’
মেজর সানরিয়া বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত ব্যক্তি জানিয়েছে, মাত্র এক হাজার টাকায় দালালদের মাধ্যমে অন্যের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার করে ২০টি করে সিম সংগ্রহ করতো। বেশিরভাগ সিম টেলিটক অপারেটরের হলেও কিছু এয়ারটেলেরও রয়েছে।’
ভিওআইপি ব্যবস্থায় প্রতি মিনিটের কল চার্জ ছিল মাত্র ১ টাকা, যেখানে সার্ভার পরিচালনার খরচ হতো ৭৫ পয়সা। ফলে প্রতি মিনিটে ২৫ পয়সা করে লাভ করতো চক্রটি। প্রতিদিন হাজার হাজার মিনিট কল হতো এসব সিম ব্যবহার করে। এর ফলে সরকার হারাচ্ছিল বিপুল অংকের বৈধ রাজস্ব।
র্যাব জানিয়েছে, জব্দকৃত সরঞ্জাম এবং সিমগুলো পরীক্ষা করে আরও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। আটক ব্যক্তি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। চক্রটির পেছনে আরও কারা জড়িত, সেটি খতিয়ে দেখতে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
বিটিআরসি ও এনটিএমসি’র সহযোগিতায় চিহ্নিত এই চক্রটি ‘ভিওআইপি’ ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক কল ট্রাফিক হাইজ্যাক করে আসছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এটি একটি সুসংগঠিত চক্র, যাদের শেকড় আরও গভীরে বিস্তৃত।
জেজে/ডিজে