এন মোহাম্মদ প্লাস্টিক ফ্যাক্টরিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ১৩ দফা দাবি

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে এন মোহাম্মদ প্লাস্টিক ফ্যাক্টরির শ্রমিকরা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেছে। এ সময় তারা ওভারটাইম ঠিক মতো দেওয়অ, ভয় দেখিয়ে কাজ করানো বন্ধ করাসহ ১৩ দফা দাবি তুলে ধরেন।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে উপজেলার গোমদন্ডী ফুলতল এলাকায় ফ্যাক্টরিতে এ কর্মসূচি পালন করে শ্রমিকরা।

শ্রমিকদের ১৩ দফা দাবি

সকল ওয়ার্কারের জন্য ৮ ঘণ্টা ডিউটি এবং সরকারি নিয়মে ৮ ঘণ্টা ডিউটিতে যত টাকা বেতন আসে, তা বুঝিয়ে দিতে হবে এবং যদি ১২ ঘণ্টা ডিউটি করাতে চান বাকি ৪ ঘণ্টা ওভারটাইম দিতে হবে।

কোনো ফ্যক্টরিতে জরিমানার সিস্টেম নেই, এখানেও জরিমানার সিস্টেমটা বন্ধ করতে হবে এবং ‘চাকরি ছেড়ে চলে যাও’—এই কথাও বলা যাবে না। যদি চাকরি থেকে বের করে দিতে চান তাহলে সরকারি নিয়মে ৩ মাস ১৩ দিনের বেতন দিতে হবে এবং চাকরির বয়স যদি ২ বছরের বেশি হয় সেক্ষেত্রে প্রতি বছরে ১ মাসের করে সেলারি দিতে হবে।

দিনের বেলায় এবং রাতের বেলায় ১ ঘণ্টা করে রেস্টের জন্য সময় দিতে হবে।

মেয়েদেরকে দিয়ে ভারী কাজ করানো যাবে না। ছেলেমেয়ে সমান অধিকার এটা আমরা মানি। বেতনও সমান, এটাও মানি কিন্তু তাও মেয়েরা ভারী কাজ করবে না।

সরকারি ছুটি সরকারি নিয়মে চলমান থাকতে হবে, কাউকে ভয় দেখিয়ে বন্ধের ডিউটি করানো যাবে না। যার ডিউটি করার ইচ্ছে হবে, সে করবে। তবে তার জন্য বন্ধের ডিউটির হাজিরা ডাবল দিতে হবে, যেরকম ২ ঈদে দেওয়া হয়।

যেকোনো ওয়ার্কারকে এক সেকশন থেকে অন্য সেকশনে পরিবর্তন করা যাবে না। আপনার এক সেকশনে কাজ নাই, তাই বলে কি ৩-৪ বছর চাকরি করা একজন অপারেটর অন্য সেকশনে গিয়ে কি হেল্পারি করতে পারবে না? আপনার সেকশনে যদি কাজ না থাকে তাহলে তাকে ৩ মাস ১৩ দিনের বেতন দিয়ে চাকরি থেকে বের করে দিবেন।

সবার জন্য বছরে ২৪ দিন ছুটি বরাদ্দ করে দিতে হবে। ছুটি নেওয়ার বেলায় কোনো প্রকার ঝামেলা করা যাবে না। যদি কেউ ছুটি না নেয়, তাকে ২৪ দিনের বেতন বছর শেষে বুঝিয়ে দিতে হবে।

সকল সুপারভাইজার, নাইলম্যান, সিনিয়র অপারেটর এবং মেশিন অপারেটরকে যোগ্য সম্মান দিতে হবে।

কেউ যদি স্ব-জ্ঞানে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিতে চান, তার বেতন ১০ তারিখ দিয়ে দিতে হবে। আর অ্যাসেম্বলি পয়েন্টে যেসব নির্দেশনা দেন, সবগুলোতে MD. Sir & DGM Sir admin sir সহ স্বাক্ষর এবং নোটিশ সহকারে ফ্লোরের সকলকে জানাতে হবে এবং যদি জানানো না হয় তাহলে কেউ কোম্পানির নির্দেশ মানবে না।

এ আন্দোলনের পেছনে যে সকল কর্মী আছে তাদের থেকে কাউকে চাকরি থেকে বের করে দিতে পারবেন না। যদি চাকরি থেকে বের করে দেন, তাহলে আবার আন্দোলন হবে এবং আরও কঠোরভাবে হবে। আর আগে যে ব্যক্তি যেরকম কাজ করতো, তিনি সেরকমভাবে কাজ করবে, অন্য সেকশনে পরিবর্তন করা যাবে না।

প্রতিবছরের জানুয়ারি মাসে বেতন বাড়াতে হবে ১৩-১৫% করে।

এখানে সকল কর্মচারী কাজ করতে আসে কোম্পানির জন্য। তাই কোম্পানির কাজ করতে গিয়ে যদি নিজের কোনো ক্ষতি হয়, সেটা কোম্পানির থেকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং আমাদের ফ্লোরের fast aid Box-এ পর্যপ্ত পরিমাণে ওষুধ মজুত রাখা হয় না। যদি কারও কোনো ছোট্ট এক্সিডেন্ট হয় তাকে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা দিতে অসুবিধা হয়। তাই সকল ফ্লোরের জন্য একটা মেডিকেল ক্যাম্প খুলে দিতে হবে।

আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, কোনো শ্রমিকের ওপর হয়রানি, অত্যাচার ও নিপীড়ন করা যাবে না। শ্রমিকদের প্রতিনিধিদের ন্যায্য দাবি গুরুত্ব সহকারে মেনে নিতে হবে। দাবি মেনে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নোটিশ জারি করতে হবে।

এ ব্যাপারে এন মোহাম্মদ প্লাস্টিক ফ্যাক্টরির সিও মোস্তাক বলেন, আন্দোলনকারী শ্রমিকদের দাবি দাওয়ার বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রত্যেক সেক্টর থেকে প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে তা নিরসন করা হবে।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm