খালের পাড়ে কাদামাটিতে কাঁদছিল নবজাতক

প্রতিদিনের মতো খালে গোসল করতে যান জেলে পল্লীর মুন্নী জলদাস। এ সময় হঠাৎ খালের পাড়ে কাদামাটিতে পড়ে থাকা এক নবজাতকের কান্নার শব্দ শুনতে পান তিনি। গিয়ে দেখেন শিশুটি পড়ে আছে আর কান্না করছে, আশপাশে কেউ নেই। এরপর তিনি শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি নিয়ে আসেন। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই শিশুটিকে দত্তক নিতে ছুটে আসেন।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর উপজেলার শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের শেখ পাড়া এলাকার কর্ণফুলী নদীর পাড়ের বারম্বা খালের মোহনা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।

পরে প্রশাসনের সহায়তায় শিশুকে আবারও হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে থেকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের নারী ও শিশু সেফ হোমে নেওয়া হবে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের জলদাস পাড়ার এক নারী খালে গোসল করতে নামলে হঠাৎ বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শুনতে পান। এ সময় তিনি সাঁতরে কিছু দুর গিয়ে দেখেন নদীর পাড়ে কাদামাটির মধ্যে শিশুটি পড়ে আছে। শিশুরটির শরীরে কিছু ছিল না। কাদা পানিতে পড়ে থাকা অবস্থায় নবজাতক শিশুটি কাঁদছিল। তিনি শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে নিজের বাচ্চা পরিচয়ে চিকিৎসা করান। ঘটনাটি জানাজানি হলে, শিশুটিকে দত্তক নিতে স্থানীয় লোকজন জোড় হয়ে কাড়াকাড়ি শুরু করে।

পরে খবর পেয়ে বোয়ালখালী থানা পুলিশের একটি দল বিকাল ৫টায় শিশুটিকে উদ্ধার করে আবারও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এসম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসপাতালে ছুঁটে যান।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক উদ্ধার হওয়া ছেলে শিশুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সমাজসেবা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাছে দেন। এ সময় ইউএনও শিশুটিকে কোলে নিয়ে নাম রাখেন ‘বিজয়’।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, উদ্ধার হওয়া শিশুটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। চিকিৎসা নবজাতককে শেষে চট্টগ্রাম নগরীর সমাজসেবা অধিদপ্তরের রৌফাবাদ ‘ছোট মনি নিবাসে’ স্থানান্তর করা হবে।

ইউএনও হিমাদ্রী খিসা বলেন, উদ্ধার হওয়া নবজাতকটিকে দত্তক নিতে এলাকার অনেক অভিভাবক জড়ো হয়েছেন। পরে আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমাজসেবা অধিদপ্তর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm