উত্তর জেলা বিএনপির সংবাদ সম্মেলন/ গোলাম আকবর খোন্দকারকে হত্যা করতেই গুলি চালানো হয়

গোলাম আকবর খোন্দকারকে হত্যার উদ্দেশ্যেই গুলি চালানো হয়েছে। গিয়াস কাদের চৌধুরীর সমর্থকরা এ হামলা করেছে। ভাগ্যক্রমে গুলি গলা ঘেঁষে চলে যাওয়ায় তিনি বেঁচে যান। আমরা কোনো যুদ্ধে যাইনি। নিরাপত্তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত ছিলাম না। এখন ওরা তো সন্ত্রাসী, যেকোনো সময়, যেকোনো কিছু করতে পারে। ওদের কোনো বাচ-বিচার নেই।

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকালে নগরের নাসিমন ভবনে গোলাম আকবর খোন্দকারের ওপর হামলার প্রতিবাদে উত্তর জেলা বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন রাউজান পৌরসভা বিএনপির পৌরসভা বিএনপি’র সভাপতি আবু মোহাম্মদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদল সভাপতি হাসান মোহাম্মদ জসিমসহ উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।

লিখিত বক্তব্যে উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের অন্য কোনো কর্মসূচি ছিল না। প্রয়াত নেতা মহিউদ্দীন আহমেদের কবর জিয়ারতে যাচ্ছিলাম। পথে গিয়াস উদ্দিন কাদের সমর্থিত ৭০-৮০ জন সন্ত্রাসী অতর্কিত হামলা চালায়। হামলার একপর্যায়ে গোলাম আকবর খোন্দকারকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হয়। ভাগ্যক্রমে গুলিটি সরাসরি না লাগায় তিনি বেঁচে যান। এটি সম্পূর্ণ পূর্বপরিকল্পিত এবং উদ্দেশ্য ছিল তাকে হত্যা করা।’

ঝামেলার আশঙ্কার কথা আগেই প্রশাসনকে জানানো হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কিছু ঝামেলা হওয়ার কথা জানতে পেরে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এ ধরনের কোনো শঙ্কা থাকলে সেটা তারা মোকাবেলা করবে। আমরা যেতে পারবো। প্রশাসন আশ্বস্ত করেছিল বলেই আমরা সেখানে গিয়েছিলাম।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে জসিম বলেন, ‘আমাদের কোনো প্রস্তুতি ছিল না। কারণ আমরা কোনো যুদ্ধে যাইনি। নিরাপত্তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত ছিলাম না। এখন ওরা তো সন্ত্রাসী, যেকোনো সময় যেকোনো কিছু করতে পারে। ওদের কোনো বাচ-বিচার নেই। এরা প্রতিপক্ষ মনে করলেই তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে, সন্ত্রাস করছে।’

হামলা করার পেছনে তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গোলাম আকবর খোন্দকার রাউজানে চলাচল করলেই তারা শঙ্কিত হয়ে যায়। গোলাম আকবর খোন্দকারের জনপ্রিয়তা দেখে তারা শঙ্কিত। তাকে প্রতিহত করার জন্য তারা এ ধরনের কাজ (মোকাবিলা) করছে। মঙ্গলবারতো শেষমেষ গুলিই করলো। ভাগ্যক্রমে একটুর জন্য লাগেনি। না হয়, ওনি ঘটনাস্থলেই মারা যেতেন। এটা সম্পূর্ণ পূর্বপরিকল্পিত ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। খুব দ্রুতই মামলা করবো।’

সংবাদ সম্মেলনে রাউজান বিএনপির পক্ষ থেকে আরও দাবি করা হয়, রাউজানে গত এক বছরে অন্তত ১৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে। চাঁদাবাজি, জমি দখল, বালু মহাল ও মাটি কাটার মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য এসব হত্যাকাণ্ড হচ্ছে। এসব অভিযোগে আগেও সংবাদ সম্মেলন করে কথা বলেছিলেন গোলাম আকবর খোন্দকার।

হামলার দায় অস্বীকার গিয়াস কাদেরের

তবে হামলার দায় অস্বীকার করেছেন গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী। তিনি বলেন, আমাকে দোষারোপ করলে আমি কী করতে পারি। আমি গত ১০ দিন ধরে অসুস্থ। তাই অসুস্থ অবস্থায় নির্দেশ দিতে পারি না। তাছাড়া অসুস্থ থাকায় কী ঘটনা ঘটেছে, সেটা আমি জানতামও না।

এর আগে মঙ্গলবার বিকালে রাউজানের সত্তারঘাট এলাকায় বিএনপির দুপক্ষে তুমুল সংঘর্ষ হয়। এতে গোলাম আকবর খোন্দকারসহ অনেক নেতাকর্মী আহত হন। সংঘর্ষের সময় খোন্দকারের গাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। রাতে খোন্দকারের নেতৃত্বাধীন উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। একই ঘটনায় কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর সব পর্যায়ের পদে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। তবে এই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

আইএমই/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm