চট্টগ্রামের আনোয়ারায় অবস্থিত কোরিয়ান ইপিজেডের (কেইপিজেড) অব্যবহৃত জমিতে সম্ভাব্য বিনিয়োগের সুযোগ যাচাইয়ে পরিদর্শন করেছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীদের একটি প্রতিনিধি দল।
সোমবার (৭ এপ্রিল) সকালে কোরিয়ান কোম্পানি ইয়াং ওয়ানের আমন্ত্রণে দলটি কেইপিজেডে পৌঁছে সেখানে বিভিন্ন কারখানা ঘুরে দেখেন এবং বর্তমানে কর্মরত বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। প্রায় আড়াই হাজার একর জমির এই ইপিজেডে বর্তমানে ৮ শতাধিক একরে ৪৮টি ভবনে ১৫টি কারখানায় উৎপাদন চলছে।
ইপিজেডের এক কর্মকর্তা জানান, আমরা একটি অপারেশনাল ও প্রাইভেট সেক্টরের একমাত্র ইপিজেড। এখানে বর্তমানে ১৫ জন বিনিয়োগকারী আছেন। নতুন বিনিয়োগকারীদের আমাদের পরিকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা দেখানোর জন্যই এই আয়োজন। তারা পরিদর্শনের পর নিজ নিজ সিদ্ধান্ত নেবেন।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে যতগুলো কারখানা রয়েছে, ভবিষ্যতে তার চেয়েও বেশি স্থাপন সম্ভব। ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ সম্মেলনে অংশ নেওয়া কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের ইয়াং ওয়ানের তত্ত্বাবধানে এখানে আনা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও প্রতিনিধি দল আসবে।
এ পরিদর্শন আয়োজনের পেছনে রয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আয়োজিত চার দিনব্যাপী ‘বিনিয়োগ সম্মেলন–২০২৫’। সোমবার (৭ এপ্রিল) সকালে ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এ সম্মেলনের উদ্বোধন হয়।
সম্মেলনের প্রথম দিনেই বিশেষ ফ্লাইটে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের একটি দল চট্টগ্রামে গিয়ে কেইপিজেড পরিদর্শন করেন। প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ৭ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত চার দিনব্যাপী এ বিনিয়োগ সম্মেলন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড়। এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যেও ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
তবে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান জানিয়েছেন, বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি পাওয়ার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের সম্পর্কে ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরা এবং ব্যবসায়িক সমস্যাগুলোর সমাধান।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সম্মেলন শেষে অংশগ্রহণকারী কোম্পানিগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতির একটি তালিকা তৈরি করা সম্ভব হবে। সেই তালিকার ভিত্তিতে আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে বিনিয়োগ কার্যকর করতে পারবো।
বিনিয়োগ সম্মেলনে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, ফার্মাসিটিক্যাল, ডিজিটাল ইকোনমি এবং টেক্সটাইল—এই পাঁচটি সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগের সুযোগ তুলে ধরা হচ্ছে। দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সম্ভাব্য জয়েন্ট ভেঞ্চারের পথও তৈরি করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে সরকারি কর্মকর্তা, উপদেষ্টা, রাজনৈতিক নেতা ও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সরাসরি সংলাপের সুযোগও রাখা হয়েছে।
জেজে/ডিজে