চট্টগ্রামে জোড়া খুনের ৩ দিন পর মামলা, ‘সন্ত্রাসী’ ছোট সাজ্জাদ-তামান্নাসহ আসামি ৭

চট্টগ্রামে প্রাইভেট কার ধাওয়া করে ছয়-সাতটি মোটরসাইকেল থেকে গুলি চালিয়ে প্রকাশ্যে দুই যুবককে হত্যার ঘটনায় তিন দিন পর মামলা হয়েছে। এতে ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী তামান্নাসহ সাকজনকে আসামি করা হয়েছে

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নগরীর বাকলিয়া থানায় নিহত বখতিয়ার হোসেন মানিকের মা ফিরোজা বেগম বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

নিহত দুই যুবক হলেন—বখতিয়ার হোসেন মানিক ও মো. আব্দুল্লাহ, যাদের বয়স ৩০ থেকে ৩৬ বছরের মধ্যে। এছাড়া গুলিতে আহত হয়েছেন রবিন ও হৃদয় নামে আরও দুই যুবক।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) দক্ষিণ জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) শাকিলা সোলতানা।

জানা গেছে, যে প্রাইভেট কারটিকে ধাওয়া করে হামলা চালানো হয়, সেটিতে ছিলেন পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলা। তাকে টার্গেট করেই প্রতিপক্ষ সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের অনুসারীরা হামলা চালিয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন গুলিবিদ্ধ এক যুবক ও নিহতদের স্বজনরা।

মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্না ছাড়াও অভিযুক্ত করা হয়েছে মোহাম্মদ হাসান, মোবারক হোসেন ইমন, খোরশেদ, রায়হান ও বোরহানকে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ছয় থেকে সাতজনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, নিহত মানিক ছিলেন সরোয়ার হোসেন বাবলার গাড়ির চালক, আর আব্দুল্লাহ তার ব্যক্তিগত সহকারী। গত ২৯ মার্চ রাতে নতুন ব্রিজ এলাকায় আড্ডা শেষে প্রাইভেট কারে করে মানিক, সরোয়ার, আব্দুল্লাহ, রবিন, হৃদয় ও ইমন বাড়ি ফিরছিলেন। রাত ২টার দিকে রাজাখালী ব্রিজের ওপর পৌঁছালে ছয়-সাতটি মোটরসাইকেল থেকে তাদের গাড়ির ওপর গুলি চালানো হয়।

গুলিতে গাড়ির পেছনের গ্লাস ভেদ হয়ে যায়। জীবন বাঁচাতে মানিক বহদ্দারহাটের দিকে না গিয়ে বাকলিয়া এক্সেস রোড হয়ে চকবাজারের দিকে চলে যান। সোয়া ২টার দিকে চকবাজার থানার নবাব সিরাজউদ্দৌলা সড়কে পৌঁছালে মোটরসাইকেলে থাকা হামলাকারীরা আবারও এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে মানিক ও আব্দুল্লাহ গুলিবিদ্ধ হন। গাড়িতে থাকা সরোয়ার ও ইমন কৌশলে পালিয়ে যান। পরে হামলাকারীরা ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যায়। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মানিক ও আব্দুল্লাহকে মৃত ঘোষণা করেন।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী তামান্নার পরিকল্পনায় সরোয়ার হোসেন বাবলা এবং তার অনুসারীদের টার্গেট করেই হামলাটি চালানো হয়।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত মো. রবিন বলেন, ‘প্রাইভেট কারে আমরা ছয়জন ছিলাম। মানিক গাড়ি চালাচ্ছিল, আর তার পাশে বসা ছিলেন সরোয়ার হোসেন বাবলা। শাহ আমানত ব্রিজ সংলগ্ন বালুর মহাল থেকে বের হওয়ার কিছুক্ষণ পর মোটরসাইকেলে কয়েকজন এসে আমাদের গাড়ির দিকে গুলি চালায়। বহদ্দারহাটের দিকে যাওয়ার কথা থাকলেও জীবন বাঁচাতে আমরা অন্য পথে চলে যাই। গাড়ির মধ্যেই গুলিবিদ্ধ হয় আব্দুল্লাহ।’

এদিকে গত ১৫ মার্চ ঢাকার বসুন্ধরা শপিং মল থেকে ছোট সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

জেজে/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm