চট্টগ্রামে এস আলমের আট কারখানা হঠাৎ বন্ধ

চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের আটটি কারখানা অনিবার্য কারণ দেখিয়ে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কারখানাগুলো চিনি, স্টিল ও ব্যাগ কারখানা খাতের। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) থেকে কারখানাগুলো বন্ধ থাকবে।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে কারখানায় বন্ধের বিষয়ে নোটিশ টাঙানো হয়। এস আলম গ্রুপের মানবসম্পদ ও প্রশাসনের প্রধান মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিনের স্বাক্ষর ছিল নোটিশে।

বন্ধ ঘোষণা করা কারখানাগুলো হলো—এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ, এস আলম ব্যাগ, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেড, ইনফিনিটি সিআর স্ট্রিপস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, স্টিল খাতের এনওএফ, চেমন ইস্পাত, এস আলম স্টিল এবং গ্যালকো।

এদিকে কারখানা বন্ধের নোটিশের পর বিকাল ৫টার দিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার মইজ্জ্যারটেক এলাকায় কারখানার সামনে জড়ো হন শ্রমিকরা। সেখানে তারা বিক্ষোভ করতে থাকেন। এরপর তাদের বকেয়া বেতন এবং ওভারটাইম দিলে তারা সেখান থেকে চলে যান। বন্ধ হওয়া আট কারখানায় কমপক্ষে ১০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করতেন বলে জানা গেছে।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে অনিবার্য কারণবশত আগামীকাল বুধবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারখানাগুলো বন্ধ থাকবে। তবে কারখানার নিরাপত্তা, সরবরাহ ও জরুরি বিভাগ খোলা থাকবে।

এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলের এক কর্মকর্তা জানান, কাঁচামাল সংকটে গত দুই-তিন মাস ধরে কারখানার প্রোডাকশন অনিয়মিত হয়ে পড়ে। মঙ্গলবার কারখানা বন্ধ ঘোষণায় আমরা পরিবার–পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়ে গেলাম।

এস আলম গ্রুপের মানবসম্পদ ও প্রশাসনের প্রধান মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন জানান, ব্যাংকের সহযোগিতা না পাওয়ায় কাঁচামাল আমদানি করা যাচ্ছে না। কাঁচামাল আমদানি করা না গেলে কারখানা চালু করার সুযোগ নেই। এজন্য সাময়িকভাবে কারখানা বন্ধ করা হয়েছে।

৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদ এবং তার ভাইয়েরা আত্মগোপনে চলে যান। এস আলম গ্রুপ ২০১৭ সালে ৭ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ব্যাংকগুলো হলো—ন্যাশনাল ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক।

এরপর আরও একাধিক ব্যাংক ও বীমা দখল করে নামে-বেনামে ব্যাংকগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা তুলে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামেও ঋণ দেওয়া হয়।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে এস আলম গোষ্ঠী বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার কোটি পাচার করেছে।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm