চট্টগ্রামে ৩ জনের শরীরে করোনা, ঝুঁকিতে জটিল রোগে আক্রান্তরা

কিট সংকট সরকারি হাসপাতালে

চট্টগ্রামে আবারও শনাক্ত হয়েছে করোনা রোগী। কিন্তু এসব রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার প্রস্তুতি সিভিল সার্জন কার্যালয়ের। কোভিড শনাক্ত করার কিট সংকট, আইসোলেশন রাখার প্রস্তুতি, আইসিইউ সংকটসহ নানান সমস্যা জর্জরিত প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি সরকারি আরটি-পিসিআর ল্যাবে এখনও কিট দেওয়া হয়নি। এর মধ্যে গত দু’দিনে তিনজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে চট্টগ্রামে।

ডাক্তারদের মতে, করোনা আক্রান্ত হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল রোগে ভোগা রোগীরা। যারা বয়স্ক, কিডনি, ক্যান্সার, নিউমোনিয়া বা হাঁপানির মতো রোগী আক্রান্ত অথবা গর্ভবতী নারী—এদের জীবনের ঝুঁকিই বেশি।

মঙ্গলবার (১০ জুন) দুপুরে সিভিল কার্যালয় থেকে জানানো হয়, চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল ও নগরীর অপর একটি বেসরকারি হাসপাতালে এসব রোগী শনাক্ত হয়। এদের মধ্যে দু’জন নগরের এবং অপরজন মিরসরাইয়ের বাসিন্দা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বাংলাদেশে কোভিড-১৯–এর নতুন ধরন ছড়াচ্ছে। ভারতের এনবি ১.৮.১ নামের নতুন ধরনটিও ছড়িয়ে পড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গত ২৩ মে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এনবি ১.৮.১ ধরনটির সংক্রমণের হার তুলনামূলক বেশি এবং এটি দ্রুত ছড়াচ্ছে।

একইসঙ্গে সংক্রমণ ঠেকাতে আবার মাস্ক পরা, ভিড় এড়িয়ে চলাসহ নানা পরামর্শ দিচ্ছে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়। সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানান, মঙ্গলবার চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক রোগীর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর আগে মা ও শিশু হাসপাতালে আরও দুজন রোগী শনাক্ত হন।

সরকারি হাসপাতালে কিট সংকট

চট্টগ্রামের সরকারি হাসপাতালগুলোতে কিট সংকট রয়েছে। করোনার প্রস্তুতি হিসেবে এখনও হাসপাতালগুলোতে করোনা শনাক্তের কিট দিতে পারেনি সিভিল সার্জন কার্যালয়। এমনকি সরকারি আরটি-পিসিআর ল্যাবেও নেই কিট।

সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম জানান, পরিস্থিতি উন্নত করার চেষ্টায় আছি। ঢাকায় পর্যাপ্ত কিটের রিকুইজেশন দিয়েছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই কিট এসে যাবে। আর চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল করোনা রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড স্থাপনের চেষ্টা শুরু হয়েছে। জেলা পর্যায়ে চিকিৎসকদের নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। করোনা শনাক্ত করার পরই রোগীকে আইসোলেটেড করে ফেলা। আইসোলেশন হাসপাতাল নির্ধারণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

ঝুঁকিতে দীর্ঘদিন রোগে আক্রান্তরা

করোনায় মৃত্যুঝুঁকি বাড়বে দীর্ঘদিন রোগে ভোগা রোগীদের। যারা হৃদরোগ, কিডনি, ক্যান্সারসহ বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি রোগী আক্রান্ত তাদের জন্য করোনা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তারা আক্রান্ত হলে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও অচল করে দিতে পারে এ রোগ।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ১৬ নম্বর মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষ জয় বলেন, কিডনি, হৃদরোগ, ক্যান্সারসহ দীর্ঘমেয়াদি নানা রোগে ভোগা রোগীরা করোনা আক্রান্ত হলে তাদের রিকভারি করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। করোনার নতুন যে ভ্যারিয়েন্ট, সেটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এ রোগে আক্রান্ত হলে শরীরের অন্যান্য অর্গানকে গ্রাস করে ফেলে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শুন্যের কোটায় নেমে আসে।

তিনি বলে, দীর্ঘদিন রোগে ভোগা রোগীদের অবশ্যই জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। মাস্ক পরিধান করতে হবে। জ্বর তিন দিনের বেশি থাকলে করোনা পরীক্ষা করতে হবে। মূলত রোগীকে আইসোলেটেড রাখতে হবে আগের মতই।

এদিকে ঈদের ছুটির পরে ফিরতি যাত্রায় সংক্রমণ ঝুঁকি বাড়তে পারে বলে সতর্কতা জারি করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। এক সরকারি চিঠিতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে।

আইএমই/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm