চট্টগ্রামের পটিয়ায় ছুরি মারার ভয় দেখিয়ে এক যুবককে অপহরণের সময় স্থানীয় জনতার প্রতিরোধের মুখে ব্যর্থ হয়। এ ঘটনায় চার অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার কুসুমপুর ইউনিয়নের মনসারটেক অফশরি ক্লাবের সামনে বোয়ালখালী টু মনসারটেকগামী রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভাগী যুবকের নাম নুর আলম সুমন (৩৩)। তিনি ওষুধ কিনতে দোকানে গিয়েছিলেন।
পুলিশ অপহরণে ব্যবহৃত একটি সিএনজি ও দুটি ছুরি উদ্ধার করে।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন—মোহাম্মদ নবী হোসেন (৩১), মোহাম্মদ নাদিম (২৫), মোহাম্মদ প্রিন্স হাওলাদার (৩৪) ও মোহাম্মদ সেফায়েত উল্লাহ (২৫)।
এদিকে এ ঘটনায় বুধবার সকালে ভিকটিমের ভাই দিদারুল আলম বাদি হয়ে ৫ জনকে এজহারভুক্ত এবং অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জনকে আসামি করে পটিয়া থানায় একটি অপহরণ মামলায় দায়ের করেছেন। সেই মামলায় গ্রেফতার চার আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার বাদি ভুক্তভোগীর ভাই দিদারুল আলম জানান, তার ভাই ও বন্ধু মোহাম্মদ ছবুর ওষধ কিনতে বাড়ি থেকে বের হন। মনসারটেক এলাকায় পৌঁছামাত্র মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত ছুরির ভয় দেখিয়ে সুমনকে জোর করে সিএনজিতে তুলে নিয়ে চট্টগ্রাম শহরের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। অপহরণকারীরা সুমনকে মারধর করে এবং ছুরি দিয়ে আঘাত করে, যার ফলে তার বাম হাত ও পেটে গুরুতর জখম হয়।
অপহরণকারীদের সিএনজিটি শহরের দিকে যাওয়ার পথেই শান্তিরহাট চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে পৌঁছালে সুমন ‘ডাকাত ডাকাত’ বলে চিৎকার করে সিএনজি থেকে নামার চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে সিএনজিটি ঘিরে ফেলেন এবং ভিকটিমকে উদ্ধার করেন। তবে মূল পরিকল্পনাকারী মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ ৩-৪ জন অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্ত কৌশলে পালিয়ে যান। এসময় চার অপহরণকারীকে আটক করে স্থানীয় জনতা। এরপর উত্তেজিত জনতা তাদের গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
শান্তির হাট এলাকার ব্যবসায়ীরা বলেন, চিৎকার না করলে বুঝতামই না এটা অপহরণ। মুহূর্তেই মানুষ ভিড় জমায়। এরপর চার অপহরণকারীকে ধরে গণধোলাই দেন বিক্ষুব্ধ জনতা। এত বড় ঘটনা লোকজন এগিয়ে না আসলে হয়তো আমরা ভয়েই চুপ থাকতাম।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে পটিয়া ও আশপাশ এলাকায় ছিনতাই ও অপহরণচেষ্টা বেড়েছে। অপরাধীরা অধিকাংশ সময় দূর থেকে সিএনজি ভাড়া করে এসে নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে টার্গেট করছে। এসব ঘটনায় হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুজ্জামান জানান, সংবাদ পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে চারজন আসামিকে হেফাজতে নিই। অপহরণে ব্যবহৃত সিএনজি এবং দুটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা স্বীকার করেছে যে তারা মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের নেতৃত্বে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের পরিকল্পনা করেছিল। পলাতকদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চলছে। অপরাধীদের ধরতে এবং এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশি অভিযান চলমান থাকবে।
ডিজে