জিপিএইচ ইস্পাতের কারখানা যেন মৃত্যুকূপ, লোক মরলে নোটিশে দায় সারে সরকারি সংস্থা
১৭ নিয়মকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে চলছে ঝুঁকিপূর্ণ কারখানা
চট্টগ্রামভিত্তিক রড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জিপিএইচ ইস্পাতের কারখানায় গত ছয় বছর ধরে একের পর এক ঘটছে দুর্ঘটনা। এসব ঘটনায় অন্তত আটজন শ্রমিক মারা গেছেন। গুরুতর আহত বা পঙ্গু হয়ে গেছেন অন্তত ৩৩ জন শ্রমিক ও কারখানার কর্মকর্তা। বছরের পর বছর ধরে এভাবে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়ে কারখানাটি চলে আসলেও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো জিপিএইচ ইস্পাতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের, মাঝে মাঝে নোটিশ পাঠিয়েই দায় সেরেছে। অথচ কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের (ডিআইএফই) পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে ২০০৬ সালের বাংলাদেশ শ্রম আইনের অন্তত ১৭টি ধারা লঙ্ঘন করেই চলছে জিপিএইচ ইস্পাতের কারখানা। এসব অভিযোগে মামলা হলেও মাত্র ৫০০ টাকা জরিমানা দিয়ে পার পেয়ে যায় জিপিএইচের মালিকপক্ষ।
দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ রয়েছে, শ্রমিকদের যথাযথ সুরক্ষা না দিয়েই কাজ করানো হয় জিপিএইচের কারখানায়। লিফট, স্কেল, এক্সেভেটর, ক্রেনসহ বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ মেশিন চালানো হয় অদক্ষ চালক দিয়ে। অতি ঝুঁকিপূর্ণ এসব মেশিন এমনকি বছরে একটিবারও পরীক্ষা করেও দেখা হয় না। অত্যন্ত বিপজ্জনক জ্বলন্ত ফার্নেসের কাছে যারা কাজ করেন, তাদের দেওয়া হয় না সুরক্ষা পোশাক। যে ধরনের কাজে লোহা এসে ছিটকে পড়তে পারে, ওই ধরনের কাজেও নেওয়া হয় না ন্যূনতম নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা। কারখানার ভেতরে বিপজ্জনক কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের প্রতি দুই ঘন্টা পর পর ৩০ মিনিট বিশ্রাম দেওয়ার নিয়ম থাকলেও কাজ করানো হয় চরম অমানবিক কায়দায়।
এ ধরনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে ২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত মাত্র দেড় বছরের বিভিন্ন সময়ে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর জিপিএইচ ইস্পাত কর্তৃপক্ষকে একের পর এক নোটিশ পাঠিয়েছে। এসব নোটিশের ভাষ্য অনুযায়ী, জিপিএইচ ইস্পাত কর্তৃপক্ষ ২০০৬ সালের বাংলাদেশ শ্রম আইনের কমপক্ষে ১৭টি ধারা লঙ্ঘন করে চলেছে। এসব অভিযোগের মধ্যে আরও রয়েছে— কারখানায় লাইসেন্স ছাড়াই ঠিকাদার নিয়োগ, নিয়োজিত শ্রমিকদের নিয়োগপত্র এবং ছবিসহ পরিচয় না দেওয়া, শ্রমিকদের সার্ভিস বুক না দেওয়া, শ্রমিক রেজিস্টার সংরক্ষণ না করা, নিরাপদ কর্মপরিবেশ তৈরিতে বিধি মোতাবেক নিরাপত্তা কমিটি গঠন ও কার্যকর না করাসহ আরও নানা অভিযোগ।
সবশেষ গত বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সুলতানা মন্দির এলাকায় জিপিএইচ ইস্পাত কারখানায় কাজ করতে গিয়ে এক বিস্ফোরণের ঘটনায় আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান রণজিত দাশ (৩০) নামের এক শ্রমিক। নবজাতক সন্তানের ভরণপোষণের জন্য দিনে ৬০০ টাকা মজুরিতে গত ৮ জানুয়ারি থেকে জিপিএইচ ইস্পাতের কারখানায় কাটারম্যানের কাজ নিয়েছিলেন এই শ্রমিক।
রণজিত দাশের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর রোববার (৩০ জানুয়ারি) জিপিএইচ ইস্পাতকে আবার কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠাল কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডিআইএফই)।
কারণ দর্শানোর ওই নোটিশে কারখানায় কেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়নি— সে ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে জিপিএইচ ইস্পাতের কারখানায় নিহত শ্রমিকের অভিজ্ঞতা সনদ ও প্রশিক্ষণ ছিল কিনা এবং দুর্ঘটনার দিন কাজে যোগ দেওয়ার সময় ওই শ্রমিক কোন্ ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেছেন— সেটিও জানতে চাওয়া হয়েছে।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের ওই নোটিশে শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে কিনা— সে ব্যাপারে ব্যাখ্যা জানাতে জিপিএইচ কর্তৃপক্ষকে ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে।
জিপিএইচ ইস্পাতের সাম্প্রতিক বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আলমগীর কবির, ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলমাস শিমুল। পরিচালক হিসেবে রয়েছেন আশরাফুজ্জামান, আবদুল আহাদ এবং আজিজুল হক রাজু। স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে আছেন মুখতার আহমেদ এবং দৈনিক আজাদী সম্পাদক এমএ মালেক।
দেখা গেছে, গত ছয় বছর ধরে জিপিএইচ ইস্পাতের কারখানায় ধারাবাহিক দুর্ঘটনায় শ্রমিক নিহত হওয়ার পর শ্রেফ নোটিশ পাঠিয়েই দায় সেরেছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। দৃশ্যত, ইস্পাত নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি এসব নোটিশকে আমলেই নেয়নি। ফলে ওই কারখানায় যেমন ঘটছে একের পর এক দুর্ঘটনা, তেমনি মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু ঘটছে শ্রমিকেরও। অনেকে পঙ্গু হয়ে গেছেন চিরদিনের জন্য।
সিপি
সম্পূর্ণ ঘুষ এর ওপরে আর বিজ্ঞাপনে মানুষের চোখে ধুলো দেওয়া।
সরকারি যত যত কর্মকর্তা আছে সবাইকে ওরা টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছে, যেখানে-সেখানে অর্থ বিনিময় করে, শুধুমাত্র তাদেরই রড ব্যবহার করতে পারবে এরকম নীতিমালা ও তারা অন্তর্ভুক্ত করিয়ে দেয়।
রড এর বুয়েট টেস্ট রেজাল্ট ও তারা ভেজাল করে। টেস্ট এর জন্য আলাদা স্যাম্পল ব্যাবহার করেন।
Kalke dekha jabe apnio sunam korben abr, jokhon ora apnar potrikai add dibey 😂 sobai batpar, ora biggapon dibe ai bartar por thekei. R apnarao chokhe mukhe kane haat diben, bandorer moto