তিন প্রতিষ্ঠানের নামে ৬ হাজার কোটি আত্মসাৎ, আরও ৩ মামলায় আসামি এস আলম

স্ত্রী ফারজানাসহ আসামি আরও ৯৫ জন

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আরও তিন মামলায় আসামি হলেন এস আলম গ্রুপের কান্ডারি সাইফুল আলম মাসুদ। একইসঙ্গে তার স্ত্রীসহ আরও ৯৪ জনকে মামলাগুলোতে আসামি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ৬ হাজার ২৪৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগে মামলাগুলো করা হয়েছে।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম দুদক কার্যালয়ে মামলাগুলো দায়ের করা হয়।

দুদক চট্টগ্রাম কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এস আলম গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠানের নামে জনতা ব্যাংক থেকে নেওয়া বিপুল অঙ্কের ঋণ সুদে–আসলে পরিশোধ না করে আত্মসাৎ করা হয়েছে—এমন অভিযোগে এসব মামলা করা হয়।

প্রথম মামলা হয় ২ হাজার কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের, এস আলম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডের নামে জনতা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সুদে–আসলে ২ হাজার ৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার নথি অনুযায়ী, ২০০৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ৬ মার্চ পর্যন্ত সময়ে এই অনিয়ম ঘটে। এ মামলায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল আলম মাসুদ, পরিচালক হিসেবে তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন, জনতা ব্যাংকের ২৮ জন কর্মকর্তাসহ মোট ৩২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

দ্বিতীয় মামলাটি করা হয় স্টিল মিলের নামে ২ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা লুটের অভিযোগে, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল মিলের নামে নেওয়া ঋণ থেকে সুদে–আসলে ২ হাজার ২৯৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৬ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে এই অর্থ আত্মসাৎ করা হয়। এ মামলায় সাইফুল আলম মাসুদসহ জনতা ব্যাংকের ২৫ জন কর্মকর্তাসহ মোট ৩২ জনকে আসামি করা হয়।

তৃতীয় মামলাটি হয় ট্রেডিং কোম্পানির নামে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের। এস আলম ট্রেডিং কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের নামে ঋণ নিয়ে সুদে–আসলে ১ হাজার ৯৪২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় বলা হয়, ২০০৫ সালের ১০ মে থেকে চলতি বছরের ৬ এপ্রিল পর্যন্ত এই অনিয়ম চলে। এতে সাইফুল আলম মাসুদ, তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন, পরিবারের ৫ সদস্য, জনতা ব্যাংকের ২৬ জন কর্মকর্তাসহ মোট ৩১ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর এস আলম গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠানের নামে নেওয়া ৩ হাজার ৮৫ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ আত্মসাতের অভিযোগে দুদক দুটি মামলা করে।

এর আগে ৯ জুলাই গ্রুপের কান্ডারি সাইফুল আলম ও তার ঘনিষ্ঠদের নামে থাকা ৫৩টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়। এ ছাড়া ২৪ জুন বিদেশে থাকা তাঁদের ঘরবাড়ি, জমি ও অন্যান্য সম্পদ জব্দের নির্দেশ দেন আদালত। এরও আগে ১৭ জুন আদালত ১৮০ কোটি টাকার জমি জব্দ করার আদেশ দেন। আর ১৪ জানুয়ারি রাজধানীর গুলশান, ধানমন্ডি, উত্তরা ও বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন এলাকায় থাকা প্রায় ২০০ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ এবং একই সঙ্গে ৬৮টি ব্যাংক হিসাব বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। সবশেষে গত বছরের ৭ অক্টোবর এস আলম, তাঁর স্ত্রী, সন্তান ও ভাইসহ মোট ১৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত।

এএইচ/ডিজে

ksrm