সাতকানিয়ার ১৫০০ একর জমিতে বোরো আবাদ অনিশ্চিত, বিপাকে কৃষক-বিএডিসি

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় প্রায় ১ হাজার ৫০০ একর জমির বোরো ধান চাষ এখন চরম ঝুঁকিতে পড়েছে। পানি উত্তোলনের অনুমতি নিয়ে প্রশাসনিক জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় অভিযান চালিয়ে পানি উত্তোলনের সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এতে বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি), সেচ প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও শত শত কৃষক পরিবার।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গরলা খাল–নয়াখালকে কেন্দ্র করে পরিচালিত এই সেচ প্রকল্পটি ১৯৮১ সাল থেকে বোরো আবাদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। প্রকল্প ব্যবস্থাপক বশির আহাম্মদ, মোহাম্মদ ফোরকান, মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম, ওবায়দুল ও আবছারের তত্ত্বাবধানে দীর্ঘদিন ধরে কৃষকেরা নির্বিঘ্নে সেচ সুবিধা পেয়ে আসছিলেন।

কিন্তু খালটি জোয়ার-ভাটা নির্ভর হওয়ায় ভাটার সময় পানি না থাকলে সেচের মেশিন চালানো সম্ভব হয় না। এমন পরিস্থিতিতে কৃষি জমি রক্ষায় স্থানীয় কৃষকেরা পাঠানী পুলের পশ্চিম পাশে অবস্থিত বড়, বড় ডোবা থেকে পানি উত্তোলনের অনুমতি চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেন।

চলতি মৌসুমে নির্ধারিত সময়ে পানি না পাওয়ায় বোরো চাষ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় প্রকল্প ব্যবস্থাপকরা ডোবা থেকে মেশিনের মাধ্যমে পানি তুলে গরলা খাল–নয়াখালে সংরক্ষণ করে সেচ কার্যক্রম চালু রাখেন। তবে এই কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুজ্জামান অভিযান চালিয়ে পানি উত্তোলনের সরঞ্জামাদি জব্দ করেন।

এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সাতকানিয়া বিএডিসির উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ইকবাল হোসাইন। তিনি বলেন, জোয়ারের পানি না থাকলে কৃষকেরা দীর্ঘদিন ধরেই ডোবা থেকে পানি নিয়ে চাষাবাদ করে আসছেন। একটি মহল পরিকল্পিতভাবে এর বিরোধিতা করছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা সেচ প্রকল্পের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার মাহামুদুল হাসান জানান, ডোবা থেকে পানি উত্তোলনের বিষয়ে আমরা একটি আবেদন পেয়েছি। কোনো প্রকল্পে অনুমোদন বা সংযোগ দেওয়া হলে তা সেচ কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়। আগামী ২২ ডিসেম্বর সেচ কমিটির সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।

স্থানীয় কৃষকদের আশঙ্কা, বিকল্প পানি উৎস ব্যবহার করতে না পারলে চলতি মৌসুমে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হবে। দ্রুত অনুমোদন না এলে জমিতে ধান রোপণ ও ফলন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে বলে তারা জানান। কৃষকেরা অবিলম্বে সমস্যার স্থায়ী সমাধান এবং সেচ কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এএইচ

ksrm