‘পাখির খাদ্য’ লিখে ২৫ টন নিষিদ্ধ পোস্তদানা এনে চট্টগ্রাম বন্দরে ধরা ৬ কোটি টাকার চালান

চট্টগ্রাম বন্দরে মিথ্যা ঘোষণায় আনা বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ পোস্তদানা জব্দ করেছে কাস্টমস হাউস। পাকিস্তান থেকে ‘পাখির খাদ্য’ হিসেবে দেখানো এই চালানের কনটেইনার খুলতেই বেরিয়ে আসে প্রায় ২৫ টন পোস্তদানা, যার বাজারমূল্য আনুমানিক ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করে।

নিষিদ্ধ পণ্যের আমদানির এই ঘটনা শুরু হয় গত ৯ অক্টোবর। চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী এলাকার প্রতিষ্ঠান মেসার্স আদিব ট্রেডিং পাকিস্তান থেকে দুটি কন্টেইনারে মোট ৩২ হাজার ১০ কেজি ‘পাখির খাদ্য’ আমদানির ঘোষণা দেয়। চালানটি আসে কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্ট এমএইচ ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে।

গোপন খবরের সূত্রে অভিযান

চট্টগ্রাম কাস্টমসের অডিট, তদন্ত ও গবেষণা (এআইআর) শাখা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কনটেইনার দুটির ছাড়পত্র স্থগিত করে। এরপর ২২ অক্টোবর সাবের আহমেদ টিম্বার কোম্পানি লিমিটেডের অফডক ডিপোতে কনটেইনার খোলা হয়। উপস্থিত ছিলেন ডিপো কর্মকর্তা ও সিএন্ডএফ প্রতিনিধিরা। কনটেইনারের মুখে ‘পাখির খাদ্য’ রাখা থাকলেও নিচে পাওয়া যায় লুকানো ২৪ হাজার ৯৬০ কেজি পোস্তদানা। ঘোষণাকৃত ‘পাখির খাদ্য’ ছিল মাত্র ৭ হাজার ২০০ কেজি।

কাস্টমস কর্মকর্তারা নমুনা সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ দপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যানোটেকনোলজি সেন্টার এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) পরীক্ষা করতে পাঠান। পরীক্ষায় নিশ্চিত হয়, উদ্ধারকৃত পণ্য আসলে পোস্তদানা, যা ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ‘ক্যাটাগরি–এ’ মাদকদ্রব্য হিসেবে উল্লেখ আছে।

নিষিদ্ধ পণ্য আমদানির চেষ্টা

চট্টগ্রাম কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার এইচএম কবির জানান, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটি কনটেইনারের মুখে ‘পাখির খাদ্য’ সাজিয়ে ভেতরে নিষিদ্ধ পোস্তদানা লুকিয়ে পাচারের চেষ্টা করে।

তিনি আরও বলেন, পোস্তদানা মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হলেও ২০২১–২০২৪ সালের আমদানি নীতি আদেশের ৩(১)(খ) ধারা ও ক্রমিক নং ১৫ অনুযায়ী এটি আমদানি নিষিদ্ধ।

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটি পণ্যের মূল্য ৩০ লাখ টাকা ঘোষণা করলেও পরিদর্শনে এর প্রকৃত বাজারমূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। কাস্টমস আইন, ২০২৩ অনুযায়ী ঘটনার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

জেজে/সিপি

ksrm