বিয়ের পিঁড়িতে বসা হলো না রিমঝিমের

রামুতে বাস-কাভার্ডভ্যান সংঘর্ষে ৩ জনের মৃত্যু

বিয়ের পিঁড়িতে বসা হলো না রিমঝিমের। সিঁথিতে সিঁদুর ওঠার আগেই বাসের সঙ্গে কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষে মারা গেছেন এ তরুণী। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বিয়ের কেনাকাটা করার জন্য শহরে আসার জন্য বাসে উঠেছিলেন তিনি, কিন্তু কে জানতো অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি চলে যাবেন দুনিয়া ছেড়ে। বিয়ের মাত্র ২০ দিন আগেই দিনমজুর বাবার সব স্বপ্ন চুড়মার হয়ে গেছে।

তবে এ দুর্ঘটনায় শুধু রিমঝিম নয়, প্রাণ হারিয়েছেন আরও দু’জন, সম্পর্কে তারা বাবা-ছেলে। আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন যাত্রী।

সোমবার (১৬ জুন) সকাল ৭টার দিকে রামু রশিদ নগরীর জেটিরঘাটা রাস্তার মাথা এলাকায় পূরবী পরিবহনের বাসের সঙ্গে একটি কাভার্ডভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত রিমঝিম বড়ুয়া পেশায় এনজিও কর্মী। তিনি রামু পূর্ব রাজারকুলের দিনমজুর হিমাংশু বড়ুয়ার মেয়ে। এছাড়া নিহত অপর দু’জন হলেন—রামুর হাবিব বস্ত্র বিতানের স্বত্বাধিকারী হাবিবুল্লাহ এবং তার হাফেজ ছেলে মোহাম্মদ রিয়াদ। ঈদের ছুটি শেষে ছেলে হাফেজ মোহাম্মদ রিয়াদকে মাদ্রাসায় পৌঁছে দিতে গিয়ে প্রাণ হারান হাবিবুল্লাহ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত রিমঝিম বড়ুয়া একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মী হিসেবে উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে কাজ করতেন। আগামী ৫ জুলাই রিমঝিমের বিয়ের হওয়ার কথা ছিল। চট্টগ্রামের পটিয়ায় রিমঝিমের হবু শ্বশুর বাড়ি।  তার ছোটবোন চট্টগ্রামে পড়ালেখা করেন। সোমবার সবাই মিলে বিয়ের কেনাকাটা করার কথা ছিল তাদের। এজন্য সকালে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রামুর বাইপাস থেকে পূরবী বাসে ওঠেন রিমঝিম। বাসে ওঠার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। লাল শাড়ি আর সিঁদুরে রঙিন হওয়ার আগেই রক্তে রঙিন হয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন তিনি।

এইদিন একই ঘটনায় স্বামী ও সন্তানহারা হয়েছেন পিএমখালী ইউনিয়নের কোহিনুর আক্তার। ৯ বছরের শিশু সন্তানকে চট্টগ্রাম মাদ্রাসায় নিয়ে যাচ্ছিলেন বাবা হাবিবুল্লাহ। ছেলেকে মাদ্রাসায় পৌঁছে দিয়ে আর বাড়ি ফেরা হয়নি তার। পথেই প্রাণ যায় বাবা-ছেলের।

হাবিবুল্লাহর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, হাবিবুল্লাহ তিন ছেলে ও এক মেয়ের জনক। মেঝ ছেলে রিয়াদকে আলেম বানানোর স্বপ্ন ছিল তার। হাফেজ শেষে ছেলেকে পড়াচ্ছিলেন চট্টগ্রামের জামিয়াতুন নূর আল আলামিয়্যাহ মাদ্রাসায়। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না।

এ বিষয়ে রামু ক্রসিং হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন জানান, সকাল ৭টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে আসা একটি কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ হয়। এতে বাসটি উল্টে সড়কের পাশে পড়ে যায়। নিহতদের মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে আনা হয়েছে।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm