চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় হেফজখানায় পড়ুয়া ৯ বছর বয়সী ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে এক মাদ্রাসার শিক্ষককে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে হস্তান্তর করেছে স্থানীয় জনতা।
অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মো. আফনান (২০)। তিনি উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর ছদাহা মিয়াজী পাড়ার মো. ইদ্রিসের ছেলে এবং হেফজ বিভাগের শিক্ষক। তিনি দুই বছর ধরে ওই মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করে আসছে।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাতে উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চাঁদের পাড়া ধর্মপুর হাফেজিয়া মাদ্রাসার আবাসিক ঘরের শয়ন কক্ষ থেকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে ওই শিক্ষককে পুলিশের দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার মধ্যরাত সোয়া ২টার দিকে বলাৎকারের শিকার ছাত্রের বাবা বাদি হয়ে ওই শিক্ষককে আসামি করে সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বলাৎকারের শিকার শিশুটি উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চাঁদের পাড়ার ধর্মপুর হাফেজিয়া হেফজখানা ও এতিমখানার হেফজ বিভাগে অধ্যয়নরত ছিল। সোমবার (২৪ মার্চ) গভীর রাতে হুজুরের কক্ষে ডেকে নিয়ে শিশুটিকে জোরপূর্বক বলাৎকার করে মাদ্রাসার শিক্ষক আফনান।
পরদিন মঙ্গলবার সকালে শিশুটি বাড়িতে এসে তার মা-বাবকে বিষয়টি খুলে বলে। এর প্রেক্ষিতে শিশুটির মা-বাবা সন্ধ্যায় ঘটনাটি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটিকে অবগত করেন। এরপর তারা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিক্ষককে আটক করেন। এ সময় উত্তেজিত জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে গণধোলাই দেন।
পরে সাতকানিয়া থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী ছাত্রের বাবা বলেন, এ ঘটনার আগে ওই শিক্ষক আমার ছেলেকে একাধিকবার বলাৎকার করলেও ছেলের ভবিষ্যৎ ও লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি এতদিন গোপন করেছিলাম। পরে দেখি বিষয়টি অতিরিক্ত হয়ে যাচ্ছে। তাই বিবেকের তাড়নায় বিষয়টি আমি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটিকে অবগত করার পর ওই শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্থানীয় লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে মাদ্রাসায় যাই। ওই শিক্ষক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। এ সময় লোকজন শিক্ষককে মারধর করে পুলিশকে দিয়ে দেয়। এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে রাতেই জনরোষ থেকে আটক করে ওই শিক্ষককে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থানায় নিয়ে আসা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ওই শিক্ষক ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন। এ ঘটনায় ছাত্রের বাবা বাদি হয়ে মঙ্গলবার মধ্যরাতে ওই শিক্ষককে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। বুধবার সকালে আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ডিজে