চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার ‘সন্ত্রাসী’ আইয়ুবকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তিনি একটি মামলায় দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তবে তাকে সবাই চিনতো আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের অন্যতম সহযোগী হিসেবে। আওয়ামী সরকারের পতনের পরও এলাকায় বেশ কয়েকবার তার অস্ত্রের মহড়া ও গুলি করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। উপজেলার তিন যুবদল নেতাকে গুলি করার ঘটনায় পর আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। এদিকে তাকে গ্রেপ্তারের পর তার দুই ভাই এলাকায় অস্ত্রের মহড়া দেয় এবং গুলিবর্ষণ করে আতঙ্ক তৈরি করে।
শুক্রবার (৪ জুলাই) মধ্যরাত দেড়টার দিকে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার অক্সিজেন মীনা বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আইয়ুব রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের কদমতলি উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত ইছাহাক মিয়া ওরফে স্টার মিয়ার ছেলে।
শনিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম শিফাতুল মাজদার।
ওসি জানান, রাঙ্গুনিয়া পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী মো. আইয়ুব চট্টগ্রাম মহানগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার অক্সিজেন মীনা বাজার এলাকায় গোপনে অবস্থান করছিলেন। গোপন সূত্রে তার অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর র্যাব-৭ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে রাঙ্গুনিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।
ওসি আরও জানান, সন্ত্রাসী আইয়ুব ২০২১ সালের একটি মামলায় দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তার বিরুদ্ধে থানায় চুরি, ডাকাতি, অস্ত্র, ভূমি, মাদক, জুলাই আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডসহ একাধিক মামলা রয়েছে। গত ৫ আগস্টের পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে এবং রিমান্ডে আনা হবে।
জানা গেছে, সন্ত্রাসী আইয়ুব রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য হিসেবে পরিচিত। তবে তিনি সবচে বেশি পরিচিত ছিলেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সহযোগী হিসেবে। সে সুবাদে তিনি দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, অস্ত্র নিয়ে শোডাউন, হুমকি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়, মাদক ব্যবসা, বালি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
গত ১০ জুন চন্দ্রঘোনা কদমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বিএনপির মানববন্ধনে প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে ব্রাশ ফায়ার করার একটি ভিডিও দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় মো. ইমন (২৬), মো. রহমত (২০) ও মো. জনি (১৮) নামে তিন যুবদল নেতাকে আহত হয়।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে ৪০২, ৩৬৩২ নং দুটি জাল দলিল সৃষ্টি করে হিন্দু পরিবার জমি দখল নেওয়ার অভিযোগ আছে। সম্প্রতি চন্দ্রঘোনা চারা বটতলের কর্ণফুলী নদীর বালুমহাল নিয়ে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় তার আরেকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এঘটনার পর থেকে আইয়ুব আত্মগোপনে চলে যান।
এদিকে আইয়ুব গ্রেপ্তার হওয়ার পরপরই ওই রাতে চন্দ্রঘোনা কদমতলী গ্রামে তাঁর দুই ভাই ইব্রাহিম ও তৈয়বের নেতৃত্বে আইয়ুব বাহিনী সদস্যরা ৬৫-৭০ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে স্থানীয় মানুষ জনের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
ডিজে