চট্টগ্রামের নেতা ‘বাঁকা পথে রাষ্ট্রপতি হওয়ার দৌড়ে’, মুখ খুললেন সাবেক বিচারপতি
কর্নেল অলির নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ
জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এবার ‘বোমা’ ফাটালেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আবদুস সালাম মামুন। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) অলি আহমদের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, ‘কতিপয় ছোট দলের বড় নেতা আরেকটি এক-এগারো সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছেন। নির্বাচন বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্র করছেন।’
শনিবার (৫ জুলাই) অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আবদুস সালাম মামুন চট্টগ্রাম নগরের একটি রেস্টুরেন্টে স্থানীয় জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ছোট দলের একজন বড় নেতা ‘বাঁকাপথে’ রাষ্ট্রপতি হওয়ার দৌড়ে আছেন। তাঁর ওই ‘খায়েশ’ মেটাতে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠেছেন। এমন অবস্থায় জাতিকে সজাগ থাকতে হবে। এসব কূটকৌশলীকে জনপ্রতিরোধ করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী আবদুস সালাম মামুন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। বিচারপতি পদ থেকে অবসরের পর দলীয় বড় পদ-পদবিতে না থাকলেও বিএনপির রাজনীতিতে বেশ সক্রিয়। তাঁর বাড়ি চট্টগ্রামের চন্দনাইশে।
জানা গেছে, ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে চন্দনাইশ-সাতকানিয়া (আংশিক) আসনে চেয়েছিলেন বিএনপির মনোনয়ন। কিন্তু পাননি। আর ২০০৮ সালে দল তাকে ওই আসনে মনোনয়ন দিতে চাইলেও তিনি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না! বলেন, ‘নমিনেশন দিয়ে দল আমাকে মূল্যায়ন করলেও ওই সময় আমি ছিলাম অপ্রস্তুত। তাই নির্বাচনে অংশ নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে মাঠে-ময়দানে ছিলাম সরব।’
আগামী সংসদ নির্বাচনে দল চাইলে বিচারপতি আবদুস সালাম মামুন এমপি প্রার্থী হবেন জানিয়ে বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ ধানের শীষ প্রতীকে বিপুল ভোটে জিতে চন্দনাইশ আসন পুনরুদ্ধার করে দলকে উপহার দেব।’
খ্যাতিমান আইনজীবী মামুন বলেন, ‘চন্দনাইশে বিএনপি বা এর অঙ্গসংগঠনের কেউ কোনো অপকর্মে জড়িত নেই। বর্তমানে কর্নেল অলির নামে এখানে বেশ জোরেসোরে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি চলছে। কিন্তু ওই দলের নেতাদের কেউ এতে বাধা দেন না; আবার বিচারও করেন না। অনেকটা চাঁদাবাজরা উৎসাহ-উদ্দীপনায় ওই অপকর্মে লিপ্ত।’
জাতি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো একটি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার মসৃণ পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত। এই অবস্থায় তথাকথিত কতিপয় ছোট দলের বড় নেতা নিজেদের ব্যক্তিস্বার্থে এবং গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করার উদ্দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিনষ্ট করার উদ্দেশে বিভিন্ন অজুহাত তৈরি করে অগণতান্ত্রিক পরিস্থিতি তৈরির চক্রান্ত করছেন।’
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট এবং চন্দনাইশ আসনে একাধিকবার নির্বাচিত এমপি ও সাবেক মন্ত্রী অলি আহমদ বীর বিক্রম। ‘ছোট দলের বড় নেতা’ বলতে তাকে উদ্দেশ্য করে এসব অভিযোগ করা হচ্ছে কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে বিচারপতি মামুন বলেন, ‘আমি জাতীয় পর্যায়ে যারা রাজনীতি করছেন এবং যাদের দল ছোট হলেও নেতা হিসেবে বড় মনে করেন কিংবা বড় বলে দাবি করেন; তাদের উদ্দেশে এ কথাগুলো বলছি।’