চট্টগ্রামের চারুকলায় বর্ষবরণের প্রস্তুতি, রং-তুলির ছোঁয়ায় চলছে কারুকাজ
৪৭ বছরে ডিসি হিলের বর্ষবরণ, সিআরবিতে অনুষ্ঠান দু’দিন
চট্টগ্রামের চারুকলা ইনস্টিটিউটে চলছে বাংলা নববর্ষ ১৪৩৩ উদযাপনে ব্যাপক প্রস্তুতি। এখানকার শিক্ষার্থীরা বাঙালির প্রাণের এই উৎসবকে পরিপূর্ণ করতে চেষ্টার কোনো কমতি রাখছেন না। শিল্পী রশিদ চৌধুরী আর্ট গ্যালারী পরিপূর্ণ বিভিন্ন মুখোশ ও কাঠামোতে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে এই কর্মযজ্ঞ।
শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে নগরীর মেহেদীবাগের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র।
১৪ এপ্রিল চারুকলা থেকে বের হবে বাংলা নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রা। সকাল ৯টার দিকে চারুকলা ইনস্টিটিউটের সামনে থেকে বের হয়ে শোভাযাত্রাটি চট্টেশ্বরী মোড়, আলমাস মোড়, কাজীর দেউড়ি মোড়, এসএস খালেদ রোড, প্রেস ক্লাব থেকে ইউটার্ন হয়ে সার্সন রোড থেকে পুনরায় চারুকলা ইনস্টিটিউটে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। সন্ধ্যায় চারুকলার মুক্তমঞ্চে থাকবে সাংস্কৃতিক আয়োজন। এছাড়া রং-বেরঙের সাজগোজ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পান্তা ইলিশ, হালখাতাসহ আনা আয়োজনের মধ্যদিয়ে উদযাপন করা হবে।
২০০৬ সালে চট্টগ্রাম সরকারি চারুকলা কলেজের শিক্ষার্থীরা শুরু করেন বর্ষবরণ উদযাপন। সেই থেকে এখনও অবদি বর্ষবরণের আয়োজন করে আসছে তারা।
এবারের আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য সিংহ, বাঘ, খরগোশ, ঘোড়াসহ নানান পশু পাখির মুখোশ, আর কাঠামো তৈরি করছে শিক্ষার্থীরা। তাদের হাতের কারুকাজ আর রং-তুলির ছোঁয়ায় জীবন্ত হয়ে উঠছে এসব মুখোশ ও কাঠামো।
প্রস্তুতি ও অনুষ্ঠান সম্পর্কে চারুকলার শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের প্রস্তুতি ৮০ ভাগ শেষ হয়ে গেছে। আমাদের চারুকলার যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, তার জন্য মঞ্চ তৈরি থেকে শুরু করে মুখোশ আর ডামিও তৈরি করছি। ঈদের ছুটির পরপরই আমরা কাজ শুরু করেছি। আগামীকালের মধ্যে আমাদের সব কাজ শেষ করতে হবে।
বর্ষবরণ উদযাপন নিয়ে চারুকলার সাবেক শিক্ষার্থী মঈনুদ্দিন হাসান জানান, প্রতিবছরের মত আমরা এবছরও বর্ষবরণ ও আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করছি। রাষ্ট্রীয়ভাবে আমরা পরিবর্তনের ছোঁয়া পেয়েছি। অন্যান্য বছরের থেকে এবছর আরও বড় পরিসরে হবে। আমাদের পাহাড়ি ভাই-বোনেরা ছুটি পেয়েছে। তাদের বৈসাবি উৎসব বর্ষবরণের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।
৪৭ বছরে ডিসি হিলের বর্ষবরণ, সিআরবিতে চলবে দু’দিন
বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বরণে নগরীর ডিসি হিল ও সিআরবির শিরীষতলায় অনুষ্ঠানের অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এবার ডিসি হিলে সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদ্যাপন পরিষদের আয়োজনে অংশ নেবে ৫০টির বেশি সাংস্কৃতিক সংগঠন। ১৪ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৬টা থেকে শুরু হয়ে অনুষ্ঠান চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
জানা গেছে, ডিসি হিলের এ বর্ষবরণ অনুষ্ঠান ৪৭ বছরে পদার্পণ করেছে। অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য গত ১৩ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন আয়োজকরা, ১০ এপ্রিল তাদের অনুমোদন দেওয়া হয়।
সিআরবি শিরীষতলায় নববর্ষ উদযাপন পরিষদের অনুষ্ঠান দু’দিনব্যাপী। রোববার অনুষ্ঠিত হবে বর্ষবিদায় এবং সোমবার হবে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। রোববার বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত চলবে বর্ষবিদায় এবং সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলবে।
এমএ/ডিজে