চট্টগ্রামের ৬০ গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ ঈদুল আজহা পালন করবেন আগামীকাল শুক্রবার (৬ জুন)। এ উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট দরবার শরীফ ও গ্রামগুলোতে প্রস্তুতি ইতোমধ্যে ঈদের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
ঐতিহ্যবাহী মির্জাখীল দরবার শরীফ (সাতকানিয়া) ও জাহাঁগিরিয়া শাহছুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের (চন্দনাইশ) অনুসারীরা সৌদি আরবের চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ঈদসহ ইসলামি সব ধর্মীয় অনুশাসন পালন করে আসছেন। এই ধারার প্রবর্তক ছিলেন সুফি সাধক মাওলানা মোখলেসুর রহমান (রহ.), যিনি প্রায় ২০০ বছর আগে এ রীতির প্রচলন করেন।
শুক্রবার (৬ জুন) ঈদের জামাতের সময়সূচি অনুযায়ী, চন্দনাইশের জাহাঁগিরিয়া শাহসুফি মমতাজিয়া দরবারের পীর সৈয়্যদ মো. আলীর ইমামতিতে সকাল ৭টায় ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল আজহার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।
অন্যদিকে সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফে সকাল ৯টায় প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সৈয়্যদ মাওলানা মুহাম্মদ আবদুর রহমান শাহ জাহাঁগিরীর ইমামতিতে এবং সকাল সাড়ে ৯টায় দ্বিতীয় জামাত পরিচালনা করবেন ড. সৈয়্যদ মাওলানা মুহাম্মদ মকছুদুর রহমান জাহাঁগিরী।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ পৌরসভার বুলার তালুক, হরিনার পাড়া, ফকির পাড়া, সর্বল কাজী বাড়ি; চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চননগর, হারালা, বাইনজুরি, কানাইমাদারি, সাতবাড়িয়া, বরকল, বরমা, ধোপাছড়ি, দোহাজারি, জামিজুরি, মোহাম্মদপুর, পশ্চিম এলাহাবাদ, উত্তর কাঞ্চননগর, জুনিঘোনা, আব্বাসপাড়া, মাঝের পাড়া, দীঘির পাড়া, পন্ডিত বাড়ি, মোস্তা আলী শাহ, কেন্দুয়াপাড়া, কেশুয়া, মোহাম্মদপুর, উত্তর হাশিমপুর, ছৈয়দাবাদ, খুনিয়ারপাড়া; পটিয়ার শ্রীমাই, হাইদগাঁও, ফকির পাড়া, বাথুয়া; সাতকানিয়ার রুপকানিয়া; বাঁশখালীর জলদী, গুনাগরি, কালীপুর, গন্ডামারা, মিরিঞ্জিরতলা, ছনুয়া, সাধনপুর; আনোয়ারার তৈলারদ্বীপ, বারখাইন, চরণদ্বীপ, খরণদ্বীপ; লোহাগাড়ার বড়হাতিয়া, চুনতি, পুটিবিলা, উত্তর সুখছড়ি, বাংলাবাজার, মইশামুড়া, খোয়াছপাড়া, বাজালিয়া, কাঞ্চনা, গাটিয়াডাঙ্গা, পুরানগড়, মনেয়াবাদসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে পশু কোরবানি দিয়ে ঈদুল আজহা পালন করা হবে।
এছাড়া বোয়ালখালী, হাটাহাজারী, রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, আনোয়ারা, বাঁশখালী, পটিয়া, কর্ণফুলী, সন্দ্বীপ, ফটিকছড়ি, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি, কক্সবাজার, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, হাতিয়া, নোয়াখালী, চাঁদপুর, ফেনী, মীরসরাই, লক্ষীপুর, সীতাকুণ্ড, কুমিল্লা, সিলেট, মৌলভীবাজার, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠি, চাঁদপুর, নলসিটি, খুলনা, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, সিরাজগঞ্জসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলাসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যেখানে মির্জাখীল ও জাহাঁগিরিয়া শাহছুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের অনুসারী রয়েছেন, তারাও ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করবেন।
জাঁহাগিরিয়া দরবার শরীফের মাওলানা আবদুর রহমান জানান, মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে শুক্রবার আমরা আমাদের অনুসারীদের নিয়ে ঈদুল আজহা উদযাপন করবো। মির্জারখীলসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার অন্তত ৬০ গ্রামে থাকা দরবার শরীফের মুরিদরাও একই সময়ে ঈদুল আজহা পালন করবে।
প্রায় ২০০ বছর আগে সাতকানিয়া মির্জাখিল গ্রামে হযরত মাওলানা মোখলেছুর রহমান জাহাগিরি (র.) হানাফী মাজহাবের ফতোয়া অনুযায়ী পৃথিবীর যে কোনো দেশে চাঁদ দেখা গেলে রোজা, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহাসহ সকল ধর্মীয় উৎসব পালন করার ফতোয়া দেন।
চট্টগ্রামের ৬০ গ্রামে শুক্রবার ঈদুল আজহা পালন করার প্রস্তুতি নিলেও দেশের অন্যান্য স্থানে শনিবার (৭ জুন) পশু কোরবানির মধ্যদিয়ে পালিত হবে ঈদুল আজহা।