১৩ কোটির সেতু আছে, সড়ক নেই—মৃত্যুঝুঁকি নিয়েই চলাচল

কক্সবাজারের ঈদগড়-ইসলামাবাদ সংযুক্ত গজালিয়ায় ঈদগাঁও খালের ওপর প্রায় ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি চার বছর ধরে পড়ে আছে অচল অবস্থায়। ৯০ মিটার দীর্ঘ ও ১০ মিটার প্রস্থের এ সেতুর দুই প্রান্তে কোনো সংযোগ সড়ক নির্মিত হয়নি। ফলে স্থানীয় শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মই বেয়ে সেতুতে উঠতে হচ্ছে, হাঁটতে হচ্ছে দেয়ালের ওপর দিয়ে।

১৩ কোটির সেতু আছে, সড়ক নেই—মৃত্যুঝুঁকি নিয়েই চলাচল 1

সম্প্রতি সরজমিন দেখা গেছে, গজালিয়া তালিমুল কোরআন দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও পথচারীরা ঝুঁকিপূর্ণভাবে মই বেয়ে সেতু পার হচ্ছেন। কেউ বই হাতে দেয়ালের ওপরে হেঁটে যাচ্ছেন, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়ক নির্মাণে প্রায় ১৫০ মিটার বা ৮০ কড়া জমি প্রয়োজন, যা ব্যক্তিমালিকানাধীন। জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় সংযোগ সড়কের কাজ শুরু করা যায়নি। ফলে সেতুটি এখন কেবলই একটি কাঠামো হয়ে পড়ে আছে। সেতুটি চালু হলে, ঈদগাঁও-ঈদগড় সড়কের হিমছড়ি ঢালা, তিন মুখা ও সাত তারা নামের ডাকাতপ্রবণ এলাকাগুলো এড়িয়ে চলার জন্য এই সেতুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি চালু হলে ঈদগড়, গজালিয়া ও ইসলামাবাদসহ তিন উপজেলার প্রায় দুই লাখ মানুষের নিরাপদে যাতায়াত করতে পারবে।

মাদ্রাসাপড়ুয়া পূর্ব গজালিয়ার শিক্ষার্থী সিদরাতুল মুনতাহা জানায়, প্রতিদিন মই বেয়ে ওপরে উঠতে হয়। এক হাতে বই, অন্য হাতে মই ধরতে হয়। একটু পা পিছলে গেলেই বড় বিপদ হতে পারে।

সুমাইয়া জান্নাত, হুমাইরা ইয়াসমিনসহ আরও অনেক শিক্ষার্থী জানায়, বৃষ্টি হলে দেয়াল পিচ্ছিল হয়ে যায়। তখন ভয় আরও বেড়ে যায়। কিন্তু যেতে তো হবেই, ক্লাস তো মিস করা যায় না। খুব কষ্ট হয়। আমরা সংযোগ সড়কের দ্রুত বাস্তবায়ন দেখতে চাই।

গজালিয়া তালিমুল কোরআন দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আমির হোসেন বলেন, পূর্ব গজালিয়া থেকে নিয়মিত অনেক শিক্ষার্থী মাদ্রাসায় যাতায়াত করে। তাদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে সেতুর সংযোগ সড়কটি খুব দ্রুত নির্মাণ করা উচিত।

ইসলামাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জানান, সেতুর সংযোগ সড়ক জনগণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সকলকে সঙ্গে নিয়ে জায়গা ক্রয় করে হলেও এই কাজ সমাপ্ত করতে চাই। জনগণের কষ্ট আমরা বুঝি।

ইসলামাবাদ ইউনিয়ন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জুবায়েদ উল্লাহ্ জুয়েল বলেন, জমির মালিকদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছি। কিন্তু এখনও জমির মূল্য নির্ধারণ সম্ভব হয়নি। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত সমাধানের মাধ্যমে কাজ শুরু করতে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এলজিইডি সাধারণত গ্রামীণ সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণ করতে পারে না। জায়গার মালিকরা যদি নিজেরা জমি দান করেন, তাহলে দ্রুত কাজ শুরু করা সম্ভব।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm