চট্টগ্রামে নারীকে খুন করে আত্মগোপনে থাকা যুবক ঢাকা থেকে পালাচ্ছিলেন বাগেরহাটে

চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর থানার কলসি দীঘির পাড় এলাকায় তালাবদ্ধ একটি বাসা থেকে অজ্ঞাত এক নারীর লাশ উদ্ধারের পর তার পরিচয় ও হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

তদন্তে জানা গেছে, বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে মনোমালিন্য হওয়ায় তাকে খুন করেছে তারই সঙ্গী। হত্যার সঙ্গে জড়িত ইব্রাহিম হাওলাদার (২৪) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

শনিবার (২৯ মার্চ) সকালে নগরীর দামপাড়ায় সিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (ডিবি-পশ্চিম) মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান। তিনি জানান, খুন হওয়া নারীর নাম টুম্পা আক্তার (২২)। তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। তিনি নগরীর সিইপিজেডের প্যাসিফিক জিনস কারখানায় কাজ করতেন।

গত ২৬ মার্চ রাতে তালাবদ্ধ অবস্থায় টুম্পার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে জানা যায়, তিনি পোশাক কারখানার কর্মী ছিলেন এবং এক যুবকের সঙ্গে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাস করতেন। কিন্তু লাশ উদ্ধারের সময় সেই যুবক এবং তার চার বছর বয়সী ছেলেরও কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

পরবর্তীতে বাসার কাছে একটি দোকানে থাকা ক্যাশ-মেমোতে একটি মোবাইল নম্বর পেয়ে তদন্তের মোড় ঘুরে যায়। ওই নম্বরের সূত্র ধরে ঢাকার পোস্তগোলায় ইব্রাহিমের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। হত্যার পর সে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পালিয়ে যায় এবং সেখান থেকে বাগেরহাটে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিল।

গ্রেপ্তার ইব্রাহিমকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, টুম্পার সঙ্গে তার স্বামীর ছাড়াছাড়ি হয় এবং তিনি চার বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে কলসি দীঘির পাড় এলাকায় বাসা ভাড়া নেন। সেখানে ইব্রাহিমের সঙ্গে বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ান। কিন্তু সম্প্রতি তাদের মধ্যে কলহ শুরু হয়।

ঘটনার রাতে ঝগড়ার একপর্যায়ে ইব্রাহিম ঘুমন্ত অবস্থায় টুম্পার গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। হত্যার পর তিনি টুম্পার ছেলেকে নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যায় এবং রাস্তার পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এরপর ঢাকায় গা-ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করে।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম থেকে বাগেরহাটগামী রয়েল পরিবহনের একটি বাসে অভিযান চালিয়ে ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।

ডিবি পশ্চিমের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান বলেন, ‘এটি কোনো সাধারণ হত্যাকাণ্ড নয়, বরং পারিবারিক জটিলতার জেরে ঘটে যাওয়া একটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমরা তদন্ত করে হত্যার মোটিভ ও আসামির অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি।’

বন্দর থানার ওসি জানান, এ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ইব্রাহিমকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া, হত্যাকাণ্ডের পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কি না, তা আরও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। নিহত টুম্পার পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

জেজে/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm