চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে সাবেক সংসদ সদস্যদের সঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনের এক ‘সৌজন্য’ সাক্ষাৎ ঘিরে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন চট্টগ্রাম–১৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং উপদেষ্টার আত্মীয় আবু রেজা মো. নেজামউদ্দিন নদভী।
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন ও সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মো. নেজামউদ্দিন নদভী সম্পর্কে নিকটাত্মীয়। সাতকানিয়ার মাদার্শা গ্রামে তাদের পৈত্রিক বাড়িও পাশাপাশি।
গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর ঢাকার উত্তরায় গ্রেপ্তার হন সাবেক এমপি নদভী। এরপর ১১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম কারাগারে আনা হয় তাকে। এরপর দীর্ঘ ৬ মাসের বেশি সময় ধরে জনসমক্ষে দেখা যায়নি নদভীকে। অবশেষে ১৫ জুলাই ধর্ম উপদেষ্টার চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শন ঘিরে প্রকাশ পায় এক বিরল ছবি, যেখানে দেখা যাচ্ছে—চশমা-পরা, টুপি ছাড়া নদভী দাঁড়িয়ে আছেন পবিত্র কোরআন শরীফ হাতে।
ছবিতে আরও দেখা গেছে, নদভীর ডান পাশে চট্টগ্রাম-১১ আসনের (বন্দর-পতেঙ্গা) সাবেক সংসদ সদস্য এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য এমএ লতিফকে। তার পাশে টুপি পরা চকরিয়া-পেকুয়ার সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলম এবং ডান প্রান্তে হাটহাজারী থানার সাবেক ওসি রফিকুল ইসলাম। উপদেষ্টার পাশেই ছিলেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) টিপু সুলতান।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার চারদিনের মাথায় গত বছরের ৯ আগস্ট চট্টগ্রাম-১১ আসনের (বন্দর-পতেঙ্গা) সাবেক সংসদ সদস্য এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য এমএ লতিফকে পূর্ব মাদারবাড়ি থেকে আটক করে সেনাবাহিনী।
কারা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, এটি ছিল একটি ‘সরকারি সফর’। ধর্ম উপদেষ্টা চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পরিদর্শনে গেলে অন্য বন্দীদের মতো সাবেক এমপিদের সঙ্গেও কুশল বিনিময় করেন।
তবে কারা অভ্যন্তরেই এই সাক্ষাৎ নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। কেন একসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাবেক তিন এমপি, একজন সাবেক ওসি এবং বর্তমান অন্ত একজন উপদেষ্টা—এই মিলন কাকতালীয় নাকি কোনো বার্তা বহন করছে?
পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললেও ধর্ম উপদেষ্টা এ সাক্ষাৎ নিয়ে কিছু বলেননি। ফলে ছবিটি সামনে আসার পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে তৈরি হয়েছে নানান জল্পনা-কল্পনা।
সরকারি সফর হোক বা ব্যক্তিগত সৌজন্য—চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের এই ‘ভিআইপি দৃশ্য’ আপাতত চট্টগ্রামের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে, সন্দেহ নেই।
সিপি