প্রযুক্তি ও সেবানির্ভর আধুনিক নাগরিক শহর গড়ার প্রত্যয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে সংগঠন ‘চট্টগ্রাম ২.০’।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে চকবাজারের গোলজার টাওয়ারে প্রধান সমন্বয়ক ছিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভার মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে সংগঠনটি। এতে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ ও উদ্যোক্তারা অংশ নেন।
সভায় বক্তারা বলেন, সাগর, নদী ও পাহাড়বেষ্টিত চট্টগ্রাম একটি সম্ভাবনাময় শহর হলেও স্বাধীনতার পর থেকে এর উন্নয়নে ভিশনারি কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। নাগরিক সেবা, অবকাঠামো ও নগর ব্যবস্থাপনা এখনো পিছিয়ে রয়েছে। এ পরিস্থিতি বদলাতে বারোটি সিস্টার সিটির সমন্বয়ে পূর্ণাঙ্গ ‘চট্টগ্রাম সিটি সরকার’ গঠন জরুরি।
প্রধান সমন্বয়ক ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর চট্টগ্রাম নিয়ে কার্যকর কোনো আলোচনার উদ্যোগ দেখা যায়নি। নাগরিক সেবায় এই শহর অনেকটাই পিছিয়ে, যেন অভিভাবকহীন। অথচ সাগর, নদী ও পাহাড়কে কাজে লাগিয়ে একে সিঙ্গাপুর বা ব্যাংককের মতো আধুনিক নগরীতে রূপান্তর করা সম্ভব।
ইংলিশ অলিম্পিয়াডের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও অমান উল্লাহ বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো তরুণরা। তারা যদি উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত হয় এবং আন্তর্জাতিক জ্ঞান-বিনিময় নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে পারে, তবে শুধু চট্টগ্রাম নয়, গোটা বাংলাদেশের চিত্র পাল্টে যাবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন বলেন, আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে শিল্পে রূপান্তর করা জরুরি। উন্নত বিশ্বে বর্জ্য সম্পদে পরিণত হয়েছে। প্লাস্টিক, জৈব বর্জ্য ও ই-ওয়েস্টকে আধুনিক প্রযুক্তিতে প্রক্রিয়াজাত করলে কর্মসংস্থান তৈরি হবে এবং চট্টগ্রাম হবে পরিচ্ছন্ন পরিবেশবান্ধব নগরী।
লন্ডন প্রবাসী উদ্যোক্তা দেলোয়ার আহসান খান বলেন, নাগরিক সেবায় শৃঙ্খলা আনা জরুরি। ড্রাইভিং লাইসেন্স থেকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যোগাযোগ—সবখানে দক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। চট্টগ্রামকে নাগরিকবান্ধব শহরে গড়তে পারলে এটি দক্ষিণ এশিয়ার মডেল সিটিতে পরিণত হবে।
রাজনীতিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবেই চট্টগ্রামের উন্নয়ন পিছিয়ে রয়েছে। এই ঘাটতি পূরণে শক্তিশালী নাগরিক আন্দোলনের বিকল্প নেই। ‘চট্টগ্রাম ২.০’ সেই শূন্যতা পূরণের উদ্যোগ।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আতাউর রহমান, বিএম নজরুল ইসলাম, মশিউর রহমান, দেবজিৎ মুৎসুদ্দি, অর্নিবান বিশ্বাস, আল ইহসান, তাইবা নুসরাত, আশফিকা আনিলা, নিশিথা মহাজন, সানজিদা ওয়াসি, নাহিদুল ইসলাম, শুভা, নুইশাইবা বিনতে আলতাফ, মাফি ও পূর্ণতা প্রমুখ।