চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক শিক্ষার্থীকে বাসায় ডেকে এনে খুনের মামলায় স্বামী-স্ত্রীকে সাজা দিয়েছেন আদালত। এ ঘটনায় স্বামীকে আমৃত্যু ও স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া তাদের এক সহযোগীকেও যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে। আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
সোমবার (২১ জুলাই) প্রথম অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. আবদুর রহমান এ রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—মো. ইকবাল ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার এবং তাদের সহযোগী মো. হেলাল।
খুনের শিকার ওই শিক্ষার্থীর নাম—মো. আলািউদ্দিন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্র ছিলেন।
সরকারি কৌঁসুলি মাইনুল হোসেন ভুইয়া জানান, আসামি মো. ইকবালকে আদালত আমৃত্যু কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। এছাড়া অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ইকবালের স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ইকবালের সহযোগী মো. হেলালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। তবে আসামিরা জামিনে গিয়ে পলাতক। আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করেছেন।
আদালত সূত্র জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২২ মার্চ চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামীর শহীদনগর এলাকার একটি ভাড়া বাসার টয়লেট থেকে হাত–পা বাঁধা অবস্থায় আলাউদ্দিনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় নিহতের বাবা শাহ আলম বাদি হয়ে থানায় মামলা করেন। পরে তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ইয়াসমিনকে পড়াতেন আলাউদ্দিন। এতে দুজনের মধ্যে সম্পর্ক হয়। পরে ইয়াসমিনের বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু দুজনের ঘনিষ্ঠ সময়ের কিছু ভিডিও চিত্র দিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেল (প্রতারণা) করেতেন আলাউদ্দিন। ফলে ইয়াসমিন এবং তার স্বামী ইকবাল মিলে এই হত্যার পরিকল্পনা করেন এবং বাসা ভাড়া নেওয়ার নাটক সাজান। বাসা ভাড়া নেওয়ার কথা বলে তারা শহীদনগর এলাকার একটি বাসায় যান। সেখানে ডেকে আনা হয় আলাউদ্দিনকে। বাসা পছন্দ হয়েছে জানিয়ে সেখানে অবস্থান করতে থাকেন তারা। এরই মধ্যে আলাউদ্দিনকে খুন করে হাত–পা বেঁধে টয়লেটের মধ্যে ফেলে চলে যান ইকবাল ও ইয়াসমিন।
২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করেন আদালত। ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আদালত এই রায় দেন।
ডিজে