টানা বাস চালানোর ধকল ও চালকের ক্লান্তির কারণে লোহাগাড়ায় দুর্ঘটনা, ধারণা পুলিশের

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় বাস ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে ১০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ক্লান্ত চালককেই দায়ী করছে হাইওয়ে পুলিশ। ঈদের সময় টানা গাড়ি চালানোর ফলে চালক তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলেন বলে মনে করছে তারা।

ঈদের পর দ্বিতীয় দিনে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ঘটে যাওয়া এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন মিঞা বলেন, চালক টানা দায়িত্ব পালনের ফলে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন, যা দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হতে পারে। বিশেষ করে লবণপানিতে পিচ্ছিল এবং বাঁকযুক্ত সড়কে তিনি বাসের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি।

তিনি আরও জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া অংশে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তিনটি দুর্ঘটনায় ১৫ জনের মৃত্যু এবং অন্তত ৩০ জনের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (২ এপ্রিল) সকালে বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে মাইক্রোবাসের ১০ আরোহীর মৃত্যু হয়। ওই স্থান থেকে মাত্র ৩০-৩৫ গজ দূরে ঈদের দিন সকালে বাস ও মিনিবাসের সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হন। পরদিন কাছাকাছি এলাকায় দুটি মাইক্রোবাস সড়ক থেকে উল্টে পাশের খাদে পড়ে গেলে আহত হন ১২ জন।

হাইওয়ে পুলিশের প্রধান দেলোয়ার হোসেন মিঞা বলেন, আমরা দুর্ঘটনার কারণগুলো খতিয়ে দেখছি। লোহাগাড়ায় দুর্ঘটনায় পড়া রিল্যাক্স পরিবহনের বাসচালক টানা ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজারের পথে গাড়ি চালাচ্ছিলেন, ফলে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। জাঙ্গালিয়ার বাঁকে যাওয়ার পর বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে তিনি হার্ড ব্রেক করেন, যা দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। এছাড়া লবণপানির কারণে রাস্তাও কিছুটা পিচ্ছিল ছিল।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে লবণের ট্রাক থেকে পড়ে যাওয়া পানির কারণে রাস্তাগুলো প্রায়ই পিচ্ছিল হয়ে থাকে। আমরা লবণ ব্যবসায়ীদের বলেছি প্লাস্টিক বিছিয়ে লবণ পরিবহন করতে, কিন্তু তারা বলছেন, এতে ট্রাকভর্তি লবণ পানিতে ভিজে যাবে। তাই আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করে বিকল্প সমাধান খুঁজছি।

লোহাগাড়ার চুনতি অভয়ারণ্যের জাঙ্গালিয়া এলাকায় রাস্তার অবস্থা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সেখানে স্বাভাবিকভাবেই বাঁক বেশি, তার ওপর রাস্তার পাশের অংশ প্রায় সাত-আট ইঞ্চি নিচু। ফলে দ্রুতগতির কোনো যান সাইড দিতে গিয়ে রাস্তার পাশে নামাতে পারে না, যার ফলে উল্টে যাওয়া কিংবা সংঘর্ষের মতো দুর্ঘটনা ঘটছে। আমরা এসব সমস্যার সমাধানে কাজ করছি।

স্থানীয়রা জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি জাঙ্গালিয়ার দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় গতিরোধক দেওয়া হয়েছে। তবে সেখানে সার্বক্ষণিক পুলিশের উপস্থিতি না থাকলে ডাকাতির আশঙ্কা থেকে যায়, কারণ এলাকাটি নির্জন এবং আশপাশে পাহাড়ি অঞ্চল রয়েছে।

জেজে/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm