টেন্ডার ছাড়াই রেলের কোটি টাকার ক্লিনিং, মেয়াদ বাড়িয়ে চট্টগ্রামে কাজ পেল পুরনো ঠিকাদারই
ষোলশহর স্টেশন যেন ময়লার ভাগাড়
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রামে চুক্তি শেষ হওয়ার পরও মেয়াদ বাড়িয়ে একই প্রতিষ্ঠানকে ফের একটি স্টেশনের ক্লিনিংয়ের (পরিচ্ছন্নতা) কাজ দেওয়া হয়েছে। তবে প্রায় কোটি টাকার এ কাজের মেয়াদ কতদিনের জন্য হয়েছে, সে তথ্য জানা যায়নি। কিন্তু ক্লিনিংয়ের কাজে যেখানে ৪ জন থাকার কথা সেখানে মাত্র ১ জন দিয়ে করানো হচ্ছে ক্লিনিংয়ের কাজ। ফলে নামে ক্লিনিং হলেও বাস্তবে স্টেশনের আশপাশে ময়লা জমে রয়েছে। একইসঙ্গে অফিসের অপরিষ্কার রুম ও নোংরা টয়লেট ব্যবহার করতে হচ্ছে যাত্রী ও অফিস কর্মকর্তাদের।
তবে রেল কর্মকর্তারা বলছেন, ট্রেন বন্ধ থাকার দিনগুলো সমন্বয় করা হচ্ছে। তবে সে সময়কাল সম্ভবত এক মাস।
সোমবার (২৬ মে) চট্টগ্রামের ষোলশহর স্টেশনে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র।
জানা গেছে, রেলওয়ের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তার (ডিসিও) কার্যালয় থেকে রেলস্টেশনের ক্লিনিংয়ের কাজ তদারকি করা হয়। এখানে রেলের তালিকাভুক্ত ঠিকাদাররা দরপত্রের মাধ্যমে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজ নেন। গত বছরের ১ মে থেকে চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ষোলশহর স্টেশনের ক্লিনিংয়ের কাজ পায় ‘শাহ আমানত এন্টারপ্রাইজ’।
এর মধ্যে দরপত্রের মেয়াদ শেষ হলে কোনো ধরনের নতুন দরপত্র আহ্বান না করে ডিসিও দপ্তর থেকে ফের ‘শাহ আমানত এন্টারপ্রাইজকে’ স্টেশন পরিচ্ছন্নতার কাজ দেওয়া হয়। তবে দপ্তরে এ বিষয়ে খোঁজ নিলে কতদিনের জন্য তার সময় বাড়ানো হয়েছে তা কেউ জানাতে পারেননি।
নিয়ম অনুযায়ী, ঠিকাদার স্টেশনে ক্লিনিংয়ের কাজে চারজন কর্মী নিয়োগ দিয়ে কাজ করার কথা। কিন্তু ষোলশহরে একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী দিয়েই কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন শাহ আমানত এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শহীদুল ইসলাম।
চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ষোলশহর ছাড়াও ক্যান্টনমেন্ট, ফতেয়াবাদ, সরকারহাট, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, হাটহাজারী ও নাজিরহাট পরিচ্ছন্নতার কাজ করতেন শহীদুল ইসলাম।
নিজেকে বৈষম্যবিরোধী শক্তির লোক হিসেবে পরিচয় দিয়ে ষোলশহর রেলস্টেশনের মাস্টার আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ষোলশহরে গত ১৬ মে আমি যোগদান করেছি। স্টেশন, প্লাটফর্ম পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ঠিকঠাক করা হচ্ছে ঠিকাদার কোম্পানির পক্ষ থেকে।’
পরে প্রতিবেদক অপরিস্কার টয়লেট ও স্টেশনের আশপাশের কিছু ছবি রয়েছে বলে জানালে তিনি আর কোনো উত্তর দেননি।
এ বিষয়ে জানতে শাহ আমানত এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শহীদুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ১০ এবং ৭টা ১৪ মিনিটে তার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে কল দিয়েও সাড়া মেলেনি। পরে রাত ১০টা ২৫ মিনিটে ‘ভাই অসুস্থ, হাসপাতালে ভর্তি। দুঃখিত কথা বলতে পারছি না’ লিখে প্রতিবেদকের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ম্যাসেজ দেন শহীদুল।
তবে বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা তৌষিয়া আহমেদ বলেন, ‘তদারকির দায়িত্ব আমার হলেও কাজটি মূলত প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তার অধীন। মেয়াদ শেষ, তবে মধ্যখানে ট্রেন বন্ধ থাকার দিনগুলো সমন্বয় করা হচ্ছে। সে সময়কাল সম্ভবত ১ মাস হবে।’
এ বিষয়ে জানতে প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমানের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
ডিজে