কক্সবাজারের চকরিয়া থানাহাজতে বিদ্যালয়ের অফিস সহকারীর মৃত্যুর ঘটনায় থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ ৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে শুনানি শেষে এই নির্দেশ দেন জেলা দায়রা ও জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত জেলা জজ মো. মামুনুর রশিদ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট রবীন্দ্র দাশ।
অভিযুক্তরা হলেন—চকরিয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম, পুলিশের এএসআই হানিফ মিয়া, কনস্টেবল মহিউদ্দিন, কনস্টেবল ইসরাক হোসেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানম ও সহকারি শিক্ষক মো.জসীম উদ্দিন, সহকারি শিক্ষক মোস্তফা কামালা, অফিস সহায়ক মো. পারভেজ, নৈশ প্রহরী নুর মোহাম্মদসহ অজ্ঞাত ৪ থেকে ৫ জন।
অ্যাডভোকেট রবীন্দ্র দাশ বলেন, গত ২২ আগস্ট চকরিয়া থানা হেফাজত থেকে চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী ও কম্পিউটার অপারেটর দুর্জয় চৌধুরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুপায়ন দেব।
২৬ আগস্ট চকরিয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম ও চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানমসহ ৯জনকে আসামি করে থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন নিহত দুর্জয় চৌধুরীর বাবা কমল চৌধুরী। কিন্তু এজাহারটি মামলা হিসেবে রুজু করেনি থানা।
তিনি আরও বলেন, গত ৯ সেপ্টেম্বর জেলা দায়রা ও জজ আদালতে মামলার বাদি কমল চৌধুরী ২০১৩ সালের নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের ১৫ ধারা আইনে একটি ফৌজদারি এজাহার দায়ের করেন। পরে আদালতের বিচারক ভারপ্রাপ্ত জেলা জজ মো.মামুনুর রশিদ ১৪ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেন। আদালতের বিচারক বাদি কমল চৌধুরী এবং মামলার আইনজীবিদের বক্তব্য শুনেন। এর প্রেক্ষিতে বিচারক আগামী ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে থানায় সাবেক ওসি শফিকুল ইসলাম ও প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানমসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতে লিখিতভাবে জানানোর জন্য পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইফউদ্দীন শাহীনকে নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহারে বাদির বাবা কমল চৌধুরী বলেন, গত ২১ আগস্ট বিদ্যালয়ের চেক জালিয়াতি ও নগদ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে দুর্জয়কে পুলিশের হাতে দেওয়া হয়। আসলে গত ১০-১২ দিন ধরে এই অভিযোগে তাকে মানসিকভাবে চাপে রাখা হচ্ছিল। ২১ আগস্ট আবারও একই অভিযোগে বিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে বিকাল ৫টা পর্যন্ত একটি কক্ষে জিম্মি করে রাখা হয়। পরে তাকে পুলিশে তুলে দেওয়া হয়। ২২ আগস্ট সকালে থানাহাজত খুলে দুর্জয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, মামলার বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো নির্দেশনা আসেনি। নির্দেশনা আসলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিজে