মাদ্রাসাপড়ুয়া এক ছাত্রকে কৌশলে অপহরণের পর টাকা আদায়ের সময় দুই অপহরণকারীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে জনতা। এসময় উদ্ধার করা হয় ভুক্তভোগী মাদ্রাসাছাত্রকে। একইসঙ্গে মুক্তিপণের ১৭ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের সেনের হাট বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
ভুক্তভোগী মাদ্রাসাছাত্রের নাম মুহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম সাজ্জাদ (১৪)। সে কক্সবাজার জেলার সদর থানার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বড় বাজার এলাকার অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ জসিম উদ্দিনের ছেলে।
আটক অপহরনকারীরা হলেন—চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রঙ্গি পাড়ার মোহাম্মদ সেলিমের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন (২০) ও একই পাড়ার ওসমান গনির ছেলে
সাহেদুল ইসলাম (১৮)।
এর আগে শনিবার সকালে ছেলে নিখোঁজ ঘটনায় সাজ্জাদের বাবা জসিম উদ্দিন কক্সবাজার সদর থানায় জিডি করেছিলেন।
বড়হাতিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু বক্কর ছিদ্দিক, জিয়াবুল হক চৌধুরী, আবদুল হামিদ, ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন জানান, শনিবার সকালে সেনের হাট বাজারের পাশে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসের পেছনে দুই-তিনজন ছেলের চলাফেরা ও আলাপচারিতা সন্দেহজনক হওয়ায় হাসপাতালে দায়িত্বরত একজন বিষয়টি ফোন করে তাদের জানান।
এরপর সবাই ওই স্পটে গিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে মাদ্রাসাছাত্র সাজ্জাদকে অপহরণ করার কথা স্বীকার করে অপহরণকারীরা। এসময় তারা পালানোর চেষ্টা করলে দৌড়ে তাদের ধরে ফেলেন স্থানীয় জনতা।
পরে বিষয়টি পুলিশকে জানালে তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অপহরণকারী ও ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
লোহাগাড়া চুনতি পুলিশ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত উপ-পরিদর্শক মো. জিয়াউল হুদা জানান, শুক্রবার রাতে কক্সবাজার শহরের এক মাদ্রাসা ছাত্র ট্রেনে করে চট্টগ্রাম শহরের আসার জন্য কক্সবাজার রেল স্টেশন অপেক্ষা করছিল।তখনই তাকে ফলো করছিল অপহরণকারী দুই যুবক।তারাও একই ট্রেনে ওঠে তার সঙ্গে সখ্যতা করে। সাজ্জাদকে ভুল তথ্য দিয়ে সাতকানিয়া স্টেশনে নামায় তারা। এরপর তাকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে তার বাবার কাছে মুক্তিপণের টাকা চায়।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার দুপুর এরই মধ্যে কয়েক দফায় সাজ্জাদের বাবা অপহরণকারীদের মোবাইলে ১৮ হাজার টাকা বিকাশে পাঠান। এর মধ্যে অপহরণকারীরা সাজ্জাদকে বড়হাতিয়ার সেনের হাট বাজারের পাশে একটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পেছনে নিয়ে যায়। ওই এলাকায় তাদের গতিবিধি সন্দেহ হলে এলাকাবাসী তাদের আটক করে পুলিশে খবর দেয়।
ঘটনাস্থল থেকে দুই অপহরণকারীকে আটক ও ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়৷ একইসঙ্গে মুক্তিপণের ১৭ হাজার ২০০ টাকাও উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাজ্জাদের বাবা মো. জসিম উদ্দিন জানান, আমি বর্তমানে লোহাগাড়া থানায় আছি। আমার ছেলেকে বুঝে নিচ্ছি এবং কক্সবাজার থানার জিডিমূলে অপহরণ মামলা দায়ের করবো।
ডিজে