পটিয়ায় সমাজকর্মীকে আটকের পর মারামারি ও বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখালো পুলিশ

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার এক সমাজকর্মীকে আটকের পর মারামারি ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ওই ব্যবসায়ীর নামে আগে কোনো মামলা নেই, তিনি রাজনীতিতেও সম্পৃক্ত নয়।

পরিবারের দাবি, পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাকে ‘মিথ্যা মামলায়’ ফাঁসিয়েছেন। তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার।

গ্রেপ্তার ওই ব্যবসায়ীর নাম এএম জালাল উদ্দিন ওরফে রোকন (৪০)। তিনি কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের (২ নম্বর ওয়ার্ড) মৃত হাজী এটিএম হাশেমের ছেলে।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘বনফুল শো-রুম’ থেকে রোকনকে আটক করা হয়। পরে পটিয়া থানার একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।

রোকন কর্ণফুলী উপজেলার স্টুডেন্ট কেয়ার মডেল স্কুল পরিচালনা পরিষদের সভাপতি, সরকারি সনদপ্রাপ্ত এআই টেকনিশিয়ান, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) চরলক্ষ্যা ইউনিটের টিম লিডার।

কর্ণফুলীর মইজ্জ্যারটেক এলাকার স্থানীয়রা জানান, শান্তিরহাট বাজার সমিতির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও একটি জমি নিয়ে বিরোধের জেরে কোনো একটি পক্ষ পুলিশকে ব্যবহার করে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে। বিষয়টি নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করা হলে আসল সত্য উদঘাটন হতে পারে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২৯ অক্টোবর দায়ের হওয়া পটিয়া থানার ৩৪ নম্বর মামলায় তাকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে দেখিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলায় ১৪৩/৩২৩/৩২৫/৩০৭/৫০৬(২) পেনাল কোড ও বিস্ফোরক আইনের ৩/৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

কর্ণফুলী উপজেলার বাসিন্দা মুহাম্মদ জসিম ও মহি উদ্দিন জানান, রোকন কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। আমরা জানতে পেরেছি, একটি এডিট করা ভিডিওর ভিত্তিতে চক্রান্তমূলকভাবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করে আটকের কারণ জানতে চাইলে পটিয়া থানার ওসি নাজমুন নুর জানান, ‘ডেভিল হান্ট অভিযানের’ অংশ হিসেবে তাকে আটক করা হয়েছে। তবে জমিজমা সংক্রান্ত কোনো বিষয় তিনি জানেন না। জেলা পুলিশের মনিটরিং টিম কিংবা এএসপি (ডিবি)-এর সঙ্গে কথা বলতে বলেন তিনি।

এ বিষয়ে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল ও ডিবি) রাসেল জানান, আমি মাত্র পটিয়ার ওসির কাছ থেকে জানতে পারলাম যে, রোকন নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। এর বাইরে কিছু জানি না।

এ বিষয়ে জানতে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইফুল ইসলাম সানতুকে ফোন করা হলে পাওয়া যায়নি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে বিস্তারিত জানানো হলে তিনি বিষয়টি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আসাদুজ্জামানকে জানাতে বলেন। তবে একাধিকবার চেষ্টা করেও এএসপি আসাদুজ্জামানের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

পরে সময়ে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মো. আহসান হাবীব পলাশের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে বিষয়টি জানানো হলেও কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি। রাত ২টার দিকে রোকনের পরিবার সরাসরি পটিয়া থানায় গিয়ে ওসির কাছে গ্রেপ্তারের কারণ জানতে চাইলে তিনি কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন স্বজনরা।

পুনরায় জানাতে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুরের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

জেজে/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm