রাঙামাটিতে আনন্দভ্রমণের পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে গড়াল চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়ায়। সকালে পিকনিকের উদ্দেশে বেরোনো একদল ব্যবসায়ী ও তাদের স্বজনের হাসি মুহূর্তেই থেমে যায় কিরিচের কোপে। হানিফ পরিবহনের বাসের ভেতরেই শুরু হয় উত্তেজনা, বাইরে থেকে আসে লাঠিসোঠা–ধারালো অস্ত্র। কয়েক মিনিটের মধ্যেই আনন্দঘন সকাল রূপ নেয় আতঙ্কে, আর সেই রক্তাক্ত ঘটনার পর গ্রেপ্তার হন আটজন।
চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া এলাকায় শনিবার (১২ অক্টোবর) সকালে পিকনিকে যাওয়ার আগে বাসে ওঠা কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষ, মারামারি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। আহত হন অন্তত পাঁচজন।
ঘটনার পর কুমিল্লার মুরাদনগর থানার শিবানীপুর গ্রামের জুট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বাদী হয়ে বাকলিয়া থানায় মামলা করেন (জিআর নম্বর ১৬/৩২৩)। মামলায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, অজ্ঞাতনামা আরও ১২–১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
মামলায় যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তারা হলেন মো. ইউসুফ (২৫), খোরশেদ আলম (২২), মো. আরমান (২৩), মো. রিপন (৩১), সাইফুল ইসলাম জুয়েল (৩১), ইকবাল (২৫), মো. রায়হান (২২), মো. বাবু মিয়া (২৫), আক্তার হোসেন (২৬) ও মো. জিসান (২৩)। এদের বেশিরভাগই বাকলিয়া ও আশপাশের এলাকার বাসিন্দা।
এজাহার অনুযায়ী, সকাল সাড়ে ৬টার দিকে হানিফ পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৯৪২০) একটি বাস কে বি কনভেনশন সেন্টারের সামনে যাত্রী তুলছিল। সে সময় পাশ দিয়ে যাওয়া স্থানীয় কয়েকজন যুবকের সঙ্গে বাদীপক্ষের কথা কাটাকাটি হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই মো. ইউসুফ ও খোরশেদ আলমের নেতৃত্বে ১০–১২ জন লাঠিসোঠা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তারা বাসে ভাঙচুর চালিয়ে প্রায় ৯০ হাজার টাকার ক্ষতি করে।
এই হামলায় বাদী জাহাঙ্গীরসহ পাঁচজন আহত হন। বাদীর চাচা মো. জাকির হোসেন আহতদের উদ্ধার করতে গেলে তাকেও পিটিয়ে জখম করা হয়। এ সময় ইউসুফ ধারালো কিরিচ দিয়ে জাহাঙ্গীরের মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করেন। খোরশেদ আলমের কোপে তার বাম পা কেটে যায়। জিসান নামে এক আসামি এক ভুক্তভোগীর মোবাইল ছিনিয়ে নেয় এবং বাবু মিয়া ২ লাখ ১৭ হাজার টাকা নিয়ে যায় বলেও এজাহারে উল্লেখ আছে।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ারউদ্দিন বলেন, ‘তুচ্ছ বিষয় নিয়ে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়, এরপর দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহত পাঁচজনকে উদ্ধার করা হয়েছে, আটজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’