ফয়’সলেকের ত্রাস ‘কিরিচ আজাদ’ অবশেষে ধরা, রেস্টুরেন্টে লুকিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি
চাঁদাবাজি-ছিনতাই-মাদকব্যবসার অভিযোগ
চট্টগ্রাম নগরের খুলশী এলাকার ফয়’স লেকে দীর্ঘদিন ধরে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক, জুয়া ও দখলবাজির অভিযোগে আতঙ্ক সৃষ্টি করে আসছিলেন আজাদ ওরফে ‘কিরিচ আজাদ’। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাতে স্থানীয়রা অবশেষে তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
আজাদের কাছ থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার অহেদপুর গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে। বর্তমানে নগরের আকবরশাহ থানার মাইট্টা গলিতে ভাড়া বাসায় থাকেন।
চাঁদা না দিলে বেধড়ক মারধর
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে আজাদ ফয়’স লেকে নিজের কিশোর গ্যাং সহায়তায় ব্যবসায়ী, দোকানি এবং রিকশাচালকদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করতেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি প্রকাশ্যে বেধড়ক মারধর করতেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেনের কাছ থেকে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবির চেষ্টা করা হলে তিনি অস্বীকৃতি জানান। এরপর আজাদ, পাভেল ও শামীম মিলে মোশারফকে বেদড়ক মারধর করেন।
চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে আজাদ দৌঁড়ে একটি রেস্টুরেন্টে আশ্রয় নেন। পরে এলাকাবাসী তাকে ঘিরে ফেলে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে আজাদকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
মামলা ও গ্রেপ্তার
ভুক্তভোগী মোশারফ হোসেন শনিবার খুলশী থানায় মামলা দায়ের করেন। আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান বলেন, ‘সন্ত্রাসী আজাদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর মামলায় তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
এই মামলায় পুলিশ আদালতে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজাদকে প্রেরণ করেছে।
অপরাধে জড়িত দীর্ঘদিন ধরে
গত বছরের ৫ আগস্ট আজাদ আকবরশাহ থানার ফয়’স লেক পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ভাঙচুরে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তবে রহস্যজনক কারণে তখনও তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, তিনি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক, জুয়া ও ভূমি দখলসহ বিভিন্ন অপরাধ চালাতেন। এসব কাজে তিনি একটি কিশোর গ্যাং নিয়োজিত করতেন।
চাঁদা না দেওয়ার শাস্তি হিসেবে আজাদ প্রকাশ্যে মারধর করতেন, এমনকি রিকশাচালক ও সাধারণ মানুষও রেহাই পেতেন না। সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর তিনি কিছুদিন আত্মগোপনে ছিলেন। তবে কয়েকদিন আগে আবার এলাকায় ফিরে আসেন এবং চাঁদা দাবির কার্যক্রম পুনরায় শুরু করেন।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মনে স্বস্তি ফিরেছে। তবে পুলিশের মতে, আজাদের সহযোগী পাভেল ও শামীম এখনও পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান।



