বিটিসিএলের ১০ কোটি টাকার জমিতে রাতারাতি টিনের ঘেরাও-দেয়াল

অভিযোগ গেল ডিসির কাছে

চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর শিকলবাহা কলেজ বাজার এলাকায় বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) মালিকানাধীন প্রায় ১০ কোটি টাকার সরকারি জমি দখলচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও প্রভাবশালী মহলের ভূমিকা নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে।

বিটিসিএলের ১০ কোটি টাকার জমিতে রাতারাতি টিনের ঘেরাও-দেয়াল 1

৩০ বছর আগে জমি অধিগ্রহণ

সরকারি নথি অনুযায়ী, শিকলবাহা চরফরিদ মৌজার মোট ১.৮২ একর জমির মধ্যে ৫৭ শতক ১৯৯৬-৯৭ অর্থবছরে অধিগ্রহণ করা হয় তৎকালীন বাংলাদেশ তার ও টেলিফোন বোর্ডের (বর্তমান বিটিসিএল) জন্য।

জমিটি অধিগ্রহণের পর সরকারি গেজেট প্রকাশিত হয়, নামজারি সম্পন্ন হয় এবং নিয়মিত ভূমি উন্নয়ন করও পরিশোধ করা হচ্ছে। ওই জমির উপরই টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ও টেলিযোগাযোগ ভবন নির্মাণ করা হবে শিগগিরই।

রাতারাতি টিনের ঘেরাও-দেয়াল

সম্প্রতি বিটিসিএল কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে জানায়, স্থানীয় দুই ব্যক্তি—মো. জাবেদ ও কোরবান আলী, জমিটিতে রাতারাতি টিনের ঘেরা ও ইটের দেয়াল তুলে দখলের চেষ্টা করছেন এবং নিজেদের নামে সাইনবোর্ড টাঙিয়েছেন। বিটিসিএলের অভিযোগ—এটি দণ্ডবিধির ৪৪১ (অবৈধ অনুপ্রবেশ) ও ৪২৭ (ক্ষতি সাধন) ধারায় অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।

অভিযোগের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে ঢাকা বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চট্টগ্রাম আগ্রাবাদের মুখ্য মহাব্যবস্থাপক, স্থানীয় পুলিশ ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে।

জমি কিনেছেন বলে দাবি

তবে অভিযুক্ত মো. জাবেদ দাবি করেছেন, তারা স্থানীয় ওয়ারিশদের কাছ থেকে জমি ক্রয় করেছেন। তার ভাষায়, ১৮২ শতক জমির মধ্যে বিটিসিএল ৫৭ শতক কিনেছে। আমরাও ওয়ারিশদের কাছ থেকে জমি কিনেছি। এখন বিটিসিএল আমাদের জমিকেই তাদের বলে দাবি করছে।

আদালতের পূর্ববর্তী রায়

২০১০ সালে জমি নিয়ে ফরিদ আহাম্মদ গং বিটিসিএলের বিরুদ্ধে পটিয়া আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত ২০১১ সালের আদেশে ‘ভূমির আকার-আকৃতি পরিবর্তন না করা এবং নতুন কোনো নির্মাণ না করার’ নির্দেশ দেন। কিন্তু অভিযোগ অনুযায়ী, এরপরও একাধিকবার জমি দখলের চেষ্টা হয়।

যা বলছে বিটিসিএল

চট্টগ্রাম নন্দনকানন কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক এ. কে. এম বজলুর রশিদ বলেন, এটি সরকারি সম্পত্তি। অধিগ্রহণ করে নামজারি সম্পন্ন হয়েছে। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চট্টগ্রাম বিটিসিএলের মুখ্য মহাব্যবস্থাপক মুহাম্মদ মনজুর মোর্শেদ সরকার বলেন, বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি। ইতোমধ্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়দের মতে, কর্ণফুলী নদীর উপর সেতু নির্মাণের পর এলাকায় জমির দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। এতে সরকারি ও প্রাতিষ্ঠানিক জমির ওপর একাধিক প্রভাবশালী গোষ্ঠীর নজর পড়েছে। বিটিসিএলের জমিও তার ব্যতিক্রম নয়।

জেজে/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm